ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে নীরব ন্যাটো

ন্যাটো সম্মেলন
ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন শেষে যৌথ বিবৃতিতে মাত্র দুইবার উল্লেখ করা হয়েছে ইউক্রেনের নাম। যদিও কোথাও উল্লেখ নেই দেশটিকে সদস্যপদ প্রদানের বিষয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন মসনদে প্রত্যাবর্তনের পর পালাবদলের হাওয়ায় সম্মেলনের ওয়ার্কিং মিটিংয়েও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জেলেনস্কিকে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধের আশ্বাস পেয়েছেন ইউক্রেনীয় সরকারপ্রধান।

এবারের ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের অন্যতম এজেন্ডা ছিল ইউক্রেন ইস্যু। মিত্রদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় হেগ শহরে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যদিও বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক জোটের এই সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে মাত্র দুবার উল্লেখ করা হয়েছে ইউক্রেনের নাম।

গেলো বছরের সম্মেলনেও যৌথ বিবৃতিতে ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গ তোলা হয়। তবে এবার সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে দেশটিকে সহায়তার বিষয়টি ফের জানালো ন্যাটো। সঙ্গে সামরিক খাতে সরাসরি সহায়তা চালু রাখার বিষয়ে দেয়া হয়েছে আশ্বাস। রুশ সংবাদ সংস্থা আরটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এই তথ্য।

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, স্লোভাকিয়া ও তার দেশ জেলেনস্কিকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর বিপক্ষে ছিল। তাই অনানুষ্ঠানিক নৈশভোজ ছাড়া কোনো ওয়ার্কিং মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন না ইউক্রেনের সরকার প্রধান। যদিও সাইডলাইনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওয়ান ম্যান আর্মি হিসেবে লড়ে গেছেন জেলেনস্কি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ৫০ মিনিট বৈঠক করেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। চার মাস আগে হোয়াইট হাউজ সফরে সামরিক ধাঁচের পোশাক পড়লেও সমালোচনার মুখে এবার জেলেনস্কির পরনে ছিল স্যুট স্টাইল জ্যাকেট। বৈঠকটিকে দীর্ঘ ও গঠনমূলক হিসেবে উল্লেখ করেন জেলেনস্কি। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, যুদ্ধ বন্ধে শীঘ্রই রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সবাই এই যুদ্ধের শেষ দেখতে চায়। আমার মনে হয় যুদ্ধ শেষ করার সুবর্ণ সুযোগ চলে এসেছে। আমি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছি। দেখা যাক আমরা এই যুদ্ধ শেষ করতে পারি কী না।’

ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে কী না, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছেন ট্রাম্প। তার দাবি, সংকটের মধ্যেও তেল আবিবকে প্যাট্রিয়ট মিসাইল সরবরাহ করছে ওয়াশিংটন। তাই কিয়েভকে মিসাইল সরবরাহ করা সম্ভব কী না, তা পর্যালোচনা করা হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তারা অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেম চায়। আমরা একে প্যাট্রিয়ট বলি। আমি পর্যালোচনা করে দেখবো মিসাইল সরবরাহ করা যায় কী না। কারণ এটি সংগ্রহ করা দুরূহ কার্যকর হওয়ায় আমাদের এটিকে ইসরাইলে সরবরাহ করতে হচ্ছে।’

এদিকে সম্মেলন শেষে নেদারল্যান্ডস থেকে ফ্রান্সে যান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। যেখানে আগ্রাসন অপরাধ বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠনে কাউন্সিল অফ ইউরোপের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি সই করেন তিনি। ভ্লাদিমির পুতিনসহ রুশ নেতৃত্বকে বিচারের কাঠগড়ার আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান জেলেনস্কি।

ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিনসহ অন্যান্য রুশ যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিশ্চিতে রাজনৈতিক ও আইনি সহযোগিতা প্রয়োজন। ইউরোপ সবসময় বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ বল প্রয়োগের মাধ্যমে নয়, আইনের মাধ্যমে অপরাধীর সাজা নিশ্চিত করে আসছে ইউরোপ।’

এ ছাড়াও প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতি লিপিবদ্ধ করার কাজ করছে কাউন্সিল অফ ইউরোপ।

এসএস