ইরান-ইসরাইল ইস্যুতে এখনো দ্বিধায় ট্রাম্প প্রশাসন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ইসরাইলের হয়ে ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর বিষয়ে এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে যুক্তরাষ্ট্র। নীতিগত বিভাজন আছে বর্তমান প্রশাসনের মধ্যেও। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ কারণে চলমান সংঘাতে বর্তমান প্রশাসনের অবস্থান ঘোষণার জন্যে দুই সপ্তাহের সময় চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেকোনো সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে ট্রাম্প এ একই কৌশল ব্যবহার করেছেন এমন দাবিও করছেন বিশ্লেষকরা।

যে কোনো মুহূর্তে ইসরাইলের সঙ্গে মিলিত হতে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় একযোগে বিমান হামলা চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র- এমন গুঞ্জন বাতিল করে দিয়ে দুই সপ্তাহের জন্য সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এতে করে সৃষ্টি হয়েছে নতুন জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে সিদ্ধান্ত জানাতে কালক্ষেপণ কী সমঝোতার কোনো নতুন কৌশল নাকি ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্রের নীল নকশা আঁকছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

পরমাণু বিষয়ক আলোচনা থেকে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় ইরানকে ৬০ দিন সময় দিয়েছিলেন ট্রাম্প। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি কার্যকরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে গেল ২৮ মে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সময় দিয়েছেন ২ সপ্তাহ।

গেল এপ্রিলে চীন ছাড়া অন্যান্য সব দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই তিনটি প্রেক্ষাপট থেকে বোঝা যাচ্ছে কূটনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে ব্যর্থ হলে হাতে কিছুদিন সময় নেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কালক্ষেপণ করা ট্রাম্পের ট্রেড মার্কে পরিণত হয়েছে। যখনই তিনি বুঝতে পারেন আলোচনা কিংবা কূটনৈতিক চাপে ওয়াশিংটনের স্বার্থসিদ্ধি হচ্ছে না তখনই সময় চেয়ে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সিএনএনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জেফ জেলেনি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট মাঝপথে চলে যাচ্ছেন না। বরং উত্তেজনা কিছুটা দমাতে চলমান আলোচনার গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। ট্রাম্প ও প্রশাসন এই যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য কিছুটা তাড়াহুড়ো করছিলেন। দীর্ঘদিনের উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননও তাকে এই একই উপদেশ দিয়েছেন।’

ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরেও ইরান ইস্যুতে মতপার্থক্যের উদাহরণ আছে অসংখ্য। সবশেষ নিজের গোয়ান্দা বিভাগ ও এর প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইরান-ইসরাইল সংঘাতে একেকবার একেক পোস্ট দিয়ে আরও জটিল করেছেন নিজের অবস্থান। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের গতিবিধিই বলে দিচ্ছে, ইরান ইস্যুতে বারবার সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

অতীত ইতিহাস বলছে, ইরাক বা আফগানিস্তানে অভিযানের ফলে লাভের চেয়ে ওয়াশিংটনের ক্ষতির পরিমাণই বেশি। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ট্রাম্প যদি এবার ইরান ইস্যুতে ঐ একই পথে হাঁটতে শুরু করেন তার ফল হতে পারে ভয়ংকর।

ভিন্ন দুই রাষ্ট্রের যুদ্ধ নাক না গলিয়ে দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষার ম্যানডেট ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প যদিই সেই যুদ্ধেই জড়ান, তাহলে আমেরিকা ফার্স্ট নীতির মাহাত্ম্য কতটুকু থাকে সে প্রশ্নও থেকেই যাচ্ছে।

এসএস