একদিকে ইসরাইলি বাহিনীর ক্রমাগত বোমা হামলা অন্যদিকে খাদ্য সংকট ও ওষুধের সংকটে ভুগছে গাজাবাসী। চরম অনাহারে মৃত্যুর মুখে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার ১৭ হাজার শিশু।
এমন অবস্থায় গাজায় কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়া ইসরাইলিদের চালু করা বিতর্কিত ত্রাণকেন্দ্র থেকে সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ দিতে হচ্ছে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের। এসব ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোকে মৃত্যুকূপ হিসেবে বর্ণনা করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। একমুঠো খাবারের জন্য উত্তর গাজায় ভিড় করছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা আজ এক টুকরো রুটির অভাবে মারা যাচ্ছে। আমার স্ত্রী গর্ভবতী অথচ ঘরে একটু খাবার নেই।’
ত্রাণ নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে আমরা খাবার সংগ্রহ করতে এসেছি। জীবিত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরে যেতে নাও পারি। আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।’
ইসরাইলিদের দীর্ঘদিনের অবরোধ ভাঙতে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন। ত্রাণ নিয়ে দক্ষিণ ইতালি থেকে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে তাদের হান্দালা নামের একটি জাহাজ। ইতালির গ্যালিপোলি বন্দর রওনা হওয়া জাহাজে স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে আছেন আইনজীবী, ডাক্তার ও সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন।
ত্রাণ দিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এই জাহাজে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধসহ নিত্যপণ্য আছে। গাজায় ইসরাইলের অবৈধ অবরোধের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশে এই যাত্রা শুরু হয়েছে।’
অন্য একজন বলেন, ‘ইসরাইলিরা শিশুদের অনাহারে রাখছে, হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র এমনকি আবাসিক এলাকায়ও বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি সরকারের টিকে থাকার কোনো অধিকার নেই।’
এর আগে গেল ৬ জুন যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী নৌযান ম্যাডলিন ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। তবে যাত্রার তিনদিনের মাথায় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে জাহাজটি জব্দ করে ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় আটক করা হয় কিশোরী পরিবেশবিদ গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ আরোহী।