গতকাল (সোমবার, ২৫ আগস্ট) গাজায় খান ইউনুস শহরের আল-নাসের হাসপাতালে দুই দফা বোমা হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। প্রথম দফা হামলায় খবর সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে জড়ো হলে এর কয়েক মিনিটের মাথায় আরও একবার হামলা চালায় তারা। এতে নিহত হন আল-জাজিরা, এপি, রয়টার্স, এনবিসির পাঁচ সাংবাদিক। নিহত হন বেসামরিক ফিলিস্তিনিরাও।
আইডিএফের হামলায় পাঁচ সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ ফিলিস্তিনিদের নিহতের ঘটনায় ইসরাইলবিরোধী নিন্দার ঝড় বইছে বিশ্বজুড়ে। এরইমধ্যে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘গাজা উপত্যকার খান ইউনূসের নাসের হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। যার মধ্যে সাংবাদিক, ডাক্তার ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিরাও রয়েছেন। নিহত সাংবাদিকদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এ ঘটনাকে অসহনীয় বলে নিন্দা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এ পোস্টে ম্যাঁক্রো জানান, গাজায় দ্রুত স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া দরকার।
নেতানিয়াহু সরকার মুখে মানবাধিকারের কথা বলে গাজায় বর্বরতা চালাচ্ছে বলে নিন্দা জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।
তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি হামলায় পাঁচ সাংবাদিকসহ ২০ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। মানবাধিকারে বুলি দিয়ে গাজায় লাগাতার হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে নেতানিয়াহু সরকার।’
আরও পড়ুন:
নাসের হাসপাতালের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুকে দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানান।
এছাড়াও এ ঘটনাকে বর্বর উল্লেখ করে এতে নিন্দা ও শোক জানিয়েছে কানাডা, ইরান ও সৌদি আরব সরকারসহ অনেক মানবাধিকার সংস্থা।
হাইপ্রোফাইল সব সাংবাদিক হত্যার ঘটনা পুরো বিশ্বকে যখন নাড়িয়ে দিয়েছে তখনও এর দায় এড়ানোর চেষ্টা ইসরাইলের। এ ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের কথা জানান আইডিএফ মুখপাত্র এফি ডেফরিন।
তিনি বলেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা চালায়নি আইডিএফ। নিরাপত্তার স্বার্থেই সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।’
যদিও অনেকটা বাধ্য হয়ে সোমবারের ঘটানকে অনুশোচনা প্রকাশ করেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
নাসের হাসপাতালের ঘটনায় ইসরাইলের প্রতি নাখোশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না বলেও হুঁশিয়ারি তার।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘গাজায় এ ধরনের ঘটনায় খুবই অখুশি। এর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। বন্দিদের মুক্তির চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে হামাসের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
এদিকে, হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইসরাইলজুড়ে। যেখানে অংশ নেন কয়েক হাজার ইহুদি।