মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মিজান সরদারের সাথে ১০ বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মিম আক্তার রুপা। তাদের একটি পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে মিজান যৌতুকের জন্য রুপাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। রুপার বাবা জাহাঙ্গীর আলম মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মিজানকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে জমি কিনে দেন এবং সাত লাখ টাকা দিয়ে একটি দোকানও করে দেন। এরপর সে আরও যৌতুক দাবি করে। তবে রুপা তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। মিজান রুপার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। তবে ভিকটিম দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে তা সহ্য করে।
২০২৩ সালের ৬ মে রাত ১০টার দিকে মিজান কেরানীগঞ্জের কদমতলীর খালপাড় এলাকার বাসায় রুপাকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। রুপা যৌতুক দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রুপা দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ৩টার দিকে মিজান সয়াবিন তেল গরম করে এনে রুপার শরীরে ঢেলে দেয়। এতে তার শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়। তার দুই সন্তানও কিছুটা দগ্ধ হয়। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ২৫ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রুপা।
এ ঘটনায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে রুপার বাবা জাহাঙ্গীর আলম ৯ মে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। রুপা মারা যাওয়ার পর মামলাটি যৌতুকের জন্য হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। মামলাটি তদন্ত করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর শরজিৎ কুমার ঘোষ ওই বছরের ৩১ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিটগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।