অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফর। যেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রামের সন্তান হওয়ায় এই সফর ঘিরে চট্টগ্রামবাসীর প্রত্যাশাও অনেক।
চট্টগ্রামের সমুদ্র অঞ্চলের যথাযথ ব্যবহার, অবকাঠামো উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেবে এ সরকার- এমন চাওয়া ব্যবসায়ীদের। গুরুত্ব পাচ্ছে কক্সবাজার পর্যন্ত ছয় লেন সড়ক নির্মাণের বিষয়টিও।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে যে বিশাল প্রকল্পটি চলমান রয়েছে সেটার দিকে একটা বিশেষ নজর দেয়া উচিৎ। দীর্ঘদিন হয়ে গেল, ওটার সুফল আমরা পাচ্ছি না। পুরোনো কক্সবাজার সড়কটাকেও চারলেনে উন্নীতকরণ কথা আমরা বলেছিলাম, এখনো হয়নি। ফলে চট্টগ্রামের এক অমূল্য সম্পদ কক্সবাজারকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।’
সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কুটনৈতিক ও সরাকরের নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিরাও ঘুরে গেছেন চট্টগ্রাম বন্দর। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শনকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এবার এনসিটি টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরকে দেয়া নিয়ে সরব নানা পক্ষ।
আগামী দিনের বাণিজ্যিক চাহিদা পূরণে বে-টার্মিনালের কাজ দ্রুত শুরু করার পাশাপাশি অতীতের মতো কারও স্বার্থে যেন চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার না হয় সেটি নিশ্চিত করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘টার্মিনালকে ঘিরে অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য মুখিয়ে আছেন। এই সুযোগটাকে আমরা কাজে লাগাতে চাচ্ছি।’
এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘বিদেশি অপারেটররা আসবে সেটার বিরোধিতা আমি করবো না। তবে বিদেশি আনার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, সে বিষয়ে একটা মূল্যায়ন হওয়া দরকার।’
ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস চালু হলেও প্রায় শতবর্ষী কালুরঘাট রেলসেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের আশা কর্নফুলীর নদীর ওপরে কালুরঘাট সড়ক ও রেল সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধান উপদেষ্টা, যেটি নির্মাণ হলে দক্ষিণ চট্টগামবাসীর যোগাযোগের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদ উল্যাহ বলেন, ‘আমি আশা করি, উনি যেহেতু প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন, চট্টগ্রামে যেগুলো বার্নিং ইস্যু আছে, যেসব কাজ সরকারের করা উচিৎ সেগুলো যেন উনি অতিসত্তর করেন।’
সফরসূচি অনুযায়ী বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক শিক্ষক ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। ইতোমধ্যে উপদেষ্টাকে বরণ করে নিতে ও সমাবর্তনের বর্ণিল আয়োজনে প্রস্তুত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ ছাড়া হাটহাজারীতে নিজ জন্মস্থান বাথুয়া গ্রামে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।