দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠায় সম্মত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশে নেয়া ৩০টি রাজনৈতিক দল। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব মেনে জামায়াত, এনসিপিসহ ২৩টি দল চায়, যে দল সংসদ নির্বাচনে যত শতাংশ ভোট পাবে, উচ্চকক্ষে তত আসন পাবে। তবে ভোটের সংখ্যানুপাতের ঘোর বিরোধী বিএনপিসহ ছয়টি দল। তারা চায়, নিম্নকক্ষে যে দল যত শতাংশ আসন পাবে, উচ্চকক্ষে ঠিক ততটাই আসন পাবে।
উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন নিয়ে যখন মতানৈক্য, তখন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেয় গোলটেবিল বৈঠকে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নাগরিক কোয়ালিশন আয়োজিত সাংসদের উচ্চকক্ষে ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হলে উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নির্বাচন প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক আশরাফ কায়সার বলেন, ‘তারই প্রতিনিধি তার কোনো মেরুদন্ড নেই। তারই প্রতিনিধি তার একটা সামাজিক স্বীকৃতি দরকার এখন। এজন্য আপার চেম্বার করে ডাম্পিং গ্রাউন্ড করলে আমাদের কোনো কাজেই আসবে না।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জনগণের অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব বিবেচনা করলে উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রয়োজন। ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় উচ্চকক্ষে বিএনপি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চায় না বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মন্জু বলেন, কোনো না কোনো দল নিজেকে অটোমেটিক মনে করছে তিনি সরকারের পার্টি। চূড়ান্ত ঐকমত্য পৌঁছাতে পারবো কিনা আমরা শঙ্কায় আছি।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, ‘আমরা বলেছি টোটাল নির্বাচন আনুপাতিক হারে। পরে অন্য দলের কথা চিন্তা করে আমরা আমাদের পজিশন থেকে সরে এসেছি। অন্তত একটা কক্ষ সেটা আপার হাউজ।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আপনাদের মতো করে যে ক্ষমতায় আসবে সে তার মতো রুল করতে চায়। কিন্তু সংবিধান সংস্কার একটা পার্টির চাওয়ার ভিত্তিতে করা উচিত না।’
বৈঠকে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নিম্নকক্ষের আসনের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ হলে স্বৈরাচার পাকাপোক্ত হবে।
যদি আসন সংখ্যার ভিত্তিতে হয় তাহলে এইটা পুরোপুরি পণ্ডশ্রম হবে। এইটা উচ্চকক্ষ হবে নিম্নকক্ষের রেপ্লিকা। পাশাপাশি দলের আধিপত্য আরো বাড়বে।
এসময় নির্বাচনের আগে উচ্চকক্ষে বিভিন্ন দলের মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করার আহ্বান জানায় এনসিপি।