আপাতত সরকারকে আস্থায় রেখেই এগোতে চায় বিএনপি

বিশেষ প্রতিবেদন
রাজনীতি
0

বিভিন্ন মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের। তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট অবস্থান নেই দলটির। যদিও আপাতত সরকারকে আস্থায় রেখেই এগোতে চান তারা। তবে জাতীয় স্বার্থে নির্বাচন বিলম্ব হলে আন্দোলনে যাবার ইঙ্গিতও দেন তারা। তবে এটি সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা নাকি রাজনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল- তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ কেড়ে নিয়েছিল মানুষের মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে শুরু করে ভোটাধিকার। সহস্রাধিক জীবনের বিনিময়ে চব্বিশে হাসিনা যুগের অবসানের পর দেশের মানুষের মাঝে তৈরি হয় বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্খা।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর স্বভাবতই বারবার আলোচনায় আসছে নির্বাচন ও আমূল সংস্কার প্রসঙ্গ। সংস্কারের পাশাপাশি সব দলগুলো দ্রুত সময়ে নির্বাচনের দাবি করলেও সবচেয়ে সোচ্চার বিএনপি। নির্বাচন বিলম্ব হলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিতেও দেখা গেছে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের।

কিন্তু বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই শীর্ষ নেতা বলছেন, নির্বাচনের দাবিতে এই মুহূর্তে রাজপথে নামার কথা ভাবছেন না তারা। সরকারের উপর আস্থা রেখেই আগাচ্ছে তাদের দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রাজপথে নামার প্রশ্ন কেন আসবে। এই সরকার তো স্বৈরাচার নামার পর আসা সরকার। এই সরকার নিরপেক্ষভাবে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। রাস্তায় নামার তো প্রয়োজন নেই। আমরা আস্থা রাখছি। আস্থা রেখেই বলছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাবে।’

তবে ভিন্ন সুর শোনা গেলো বিএনপির আরেক শীর্ষ নেতা ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর কণ্ঠে। নির্বাচনের দাবিতে তার দল কোন কর্মসূচি দিবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে, প্রয়োজন হলে আন্দোলনের ইঙ্গিত দেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন না দিলে তো নির্বাচন আদায় করার পথে হাটতে হবে আমাদেরকে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবনতি হয়ে গিয়েছে। বাজার একেবারেই নিয়ন্ত্রণে নেই।’

বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার বক্তব্যের ভিন্নতা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলছেন, দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য দলগুলো আন্তরিক নয়। আগামী দিনের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য মতাদর্শিক ঐক্যের কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘শুরু থেকেই বিএনপি বা অনান্য দলগুল এই সরকারকে একটা চাপের মধ্যে রাখার রাজনীতি করছে।’

অন্যদিকে, সভা-সমাবেশে নেতাদের আন্দোলন কেন্দ্রিক বক্তব্যকে সরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ।

জনগণের গণতান্ত্রিক ও সামাজিক আকাঙ্খাকে প্রাধান্য দিয়ে দলগুলোকে কাজ করলেই আগামী দিনের রাজনীতির গতিপথ সুস্থ ধারায় থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সেজু