১২ বছর আগে রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহানবী হজরত মোহাম্মদ ও পবিত্র কোরআনের অবমাননার প্রতিবাদসহ ১৩ দফা দাবিতে জড়ো হয়েছিলেন আলেম-ওলামাসহ বিভিন্ন কওমি মাদরাসার লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। ২০১৩ সালের ৫ মে দিনভর উত্তেজনা ছিল হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে ঘিরে।
দিনব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর মধ্যরাতে সমাবেশে ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর বর্বর হামলা চালাতে দেখা যায় র্যাব, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীকে। সেসময় অভিযোগ ওঠে সেদিনের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনাকে ধামা চাপা দেয়ার জন্য ৬ মে ভোর রাতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের দুটি গণমাধ্যম দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়।
সরকার উৎখাতের আন্দোলন হচ্ছে বলে শাপলা চত্বর থেকে সমাবেশ উচ্ছেদের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। বিক্ষোভ দমনে শুরু হয় রাতভর অভিযান। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছিল অপারেশন সিকিউরড শাপলা, অন্যদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একই অপারেশনের নাম দেয় অপারেশন ক্যাপচার শাপলা।
সেসময়ে যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে অপারেশন ফ্লাশ আউটে ঠিক কতজন নিহত হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ৬১ জন নিহত হওয়ার তথ্য প্রকাশ করে।
এরপর থেকেই ভয়াবহ সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে আসছিলেন ভুক্তভোগীরা। বিভিন্ন সময়ে হেফাজতে ইসলাম কিংবা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইলেও বিনিময়ে মামলা-হামলরা শিকার হতে হয় বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মী থেকে শুরু করে মানবাধিকার কর্মীদের।
তবে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর শাপলা বিচারের দাবি আরো জোরালো হয়। সম্প্রতি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ থেকেও বিচারের দাবি জানানো হয়।
হেফাজত নেতারা বলছেন, ২০১৩ সালের শাপলা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা যায়নি বলেই পরবর্তীতে গুম, খুনের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার কিংবা সবশেষ জুলাই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।