আজ (বৃহস্পতিবার, ২৯ মে) রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এক প্রজ্ঞাপনে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। এর পরপরই গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে এনএসসি। এর ফলে শুন্য হয়ে পড়লো বিসিবি সভাপতির পদ।
সরকারের পক্ষ থেকে অনাস্থা আগে থেকেই ছিলো। এর সঙ্গে যোগ হয় ঘরের মানুষদের আস্থাহীনতাও। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বরাবর অনাস্থা চিঠি পাঠান ক্রিকেট বোর্ডের ৮ পরিচালক!
এখন টেলিভিশনের হাতে আসে পরিচালকদের অনাস্থা চিঠিটিও। তাতে বোর্ড সভাপতির বিরুদ্ধে তুলে ধরা হয় বিস্তর অভিযোগ। ফারুকের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান অভিযোগ বিসিবির কার্যক্রম পরিচালনা ও দায়িত্ব বন্টনের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্য বিস্তার! এমনকি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বোর্ড মিটিংয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে প্রাধান্য দেয়ার কথা থাকলেও সবাইকে পাশ কাটিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিযোগ তোলা হয়!
স্পর্শকাতর অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে একক সিদ্ধান্তে ব্যাংক থেকে টাকা হস্তান্তর, টেন্ডারলন্ডারিং এবং যাচাই-বাছাই না করেই বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা দেয়ার মত আরো একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সাবেক কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহকে একক সিদ্ধান্তেই অপসারণ করার পুরনো অভিযোগ জোরদার হয় বোর্ড পরিচালকদের চিঠিতে।
ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর অনিয়মে জড়ানোর অভিযোগও তুলেছেন বোর্ড পরিচালকরা। জানিয়েছেন, একক ক্ষমতাবলে ক্লাব দখল করেছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
বিগত সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট বিসিবির সভাপতির দায়িত্বে বসানো হয় ফারুক আহমেদকে। নয় মাসের দায়িত্বে থাকাকালীন প্রায় পুরোটা সময়েই বিসিবিতে কোনো না কোনো কারণে অস্থিরতা বিরাজ করেছে। আর সবকিছুর জন্যেই এককভাবে বোর্ড সভাপতিকে দায়ী করেছেন বোর্ড পরিচালকরা। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, এসব বিশৃঙ্খলার প্রভাব পড়েছে মাঠের ক্রিকেটেও। যে কারণে দীর্ঘদিন আইসিসি র্যাংকিংয়ে ৬-৭ এ অবস্থান করা বাংলাদেশ নেমে গেছে ১০-এ!
সবমিলিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অসন্তুষ্টির পর বিসিবি ৮ পরিচালকের সম্মিলিত অভিযোগের পর ফারুক আহমেদ আরো কোণঠাসা হয়ে পড়েন। সঙ্গে বিপিএল ইস্যুতে সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনেও এককভাবে দায়ী করা হয় সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচককে। আর সবমিলিয়ে এবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত।
ভেঙে পড়া দেশের ক্রিকেটের হাল ধরতে কে বসেন সভাপতির চেয়ারে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।