ক্লাব বিশ্বকাপে মাঠে যতটা না উত্তেজনা, টেবিলে তার চেয়ে ঢের বেশি উত্তাপ টাকার অংকে। মজার বিষয় হলো টুর্নামেন্টটা খেলেই নতুন ফুটবলার কেনার খরচ উঠে গেছে।
ম্যানচেস্টার সিটি আর চেলসির ক্ষেত্রে তো সেটাই সত্যি। গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফারের বড় একটা অংশ উঠে গেছে শুধু এ টুর্নামেন্ট থেকেই।
ম্যানসিটি চ্যাম্পিয়ন হলে আয় করবে প্রায় ৯২ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। শুধু অংশগ্রহণ করেই ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো পাচ্ছে ২৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪১০ কোটি টাকা।
আয়ের হিসাবটাও নির্দিষ্ট ছকে। গ্রুপ পর্বের একেকটি জয় মানে দেড় মিলিয়ন পাউন্ড, ড্র করলে সাড়ে ৭ লাখ পাউন্ড। পরের ধাপগুলোয় আয় অংকটা আরো বড়।
শেষ ষোলোয় জিতলে সাড়ে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড, সেমিফাইনালে গেলে পাওয়া যায় ১৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন, আর ফাইনাল জিতলেই ২৯ দশমিক ২ মিলিয়ন পাউন্ড। সিটির এখন পর্যন্ত আয় ৩৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন পাউন্ড।
চেলসি একটু কম, কারণ তারা হেরেছে ফ্লামেঙ্গোর কাছে। এ অর্থেই উঠে গেছে বেশকিছু ফুটবলারের দাম। চেলসি লিয়াম ডেলাপকে কিনেছে ৩০ মিলিয়নে, বিশ্বকাপে তার গোলেই জয়, আর তার দাম তো রীতিমতো শোধ হয়ে গেছে।
ম্যানসিটি রায়ান ইত-নুরিকে এনেছে ৩১ মিলিয়নে, যার পুরো টাকাই উঠে গেছে, সেই সঙ্গে বোনাস ৭ মিলিয়নও। চেরকি আর রেইজন্ডার্সের দামও উঠে যাবে সেমিফাইনাল বা শিরোপা জিতলেই।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির গতবারের আয় ছিল ৯৫ মিলিয়ন পাউন্ড। ম্যাচ খেলেছিল ১৭টি। এখানে আয় সেই রকমই, কিন্তু ম্যাচ মাত্র সাতটা। কিন্তু ইউরোপিয়ান লিগের প্রধান ক্লডিয়াস শ্যাফারের দুশ্চিন্তা ভিন্ন। তার মতে, টুর্নামেন্টে এত টাকার ছড়াছড়ি ঘরোয়া লিগগুলোর মাঝে আর্থিক বৈষম্য তৈরি করছে।
তার কথাতেও আছে যুক্তি। কারণ অস্ট্রিয়ার ক্লাব সালজবুর্গ গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েও পেয়েছে ১১ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যেটা তাদের লিগের বেশিরভাগ ক্লাবের পুরো মৌসুমের বাজেটের সমান।
অন্যদিকে অপেশাদার ফুটবলারদের নিয়ে গড়া ক্লাব অকল্যান্ড সিটির ফুটবলাররা নাকি টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
একটা সময় ক্লাব বিশ্বকাপ মানেই ছিল ট্রফির লড়াই। এখন সেটাই হয়ে উঠেছে টাকার খেলা। একেকটা গোল, একেকটা যেন মিলিয়ন পাউন্ডের সমান।