সালুটিকর সড়ক তিন বছরে মেরামত অর্ধেকই হয়নি; ভোগান্তিতে গোয়াইনঘাটের ৪ লাখ মানুষ

এখন জনপদে
0

দফায় দফায় কাজের মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি সিলেটের গোয়াইনঘাট সালুটিকর রাস্তার মেরামত কাজ। গত তিন বছরে ১০ কিলোমিটার রাস্তার মেরামত কাজ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই পর্যটন এলাকা গোয়াইনঘাটের চার লাখ মানুষের। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতির কারণেই এমন দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর সত্যতা মিলেছে দুদকের অভিযানেও।

সিলেটের সালুটিকর গোয়াইনঘাট সড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দ আর ভাঙাচোরা রাস্তা যেন দুর্ঘটনার ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কে চলাচলকারী বাসিন্দারা বলছেন, চলাচল অনুপযোগী এমন সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই।

চালকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘গাড়ি নিয়ে চলাচল খুবই কষ্ট হয়ে যায়, পানি জমে যায়। গাড়ি নষ্ট হয়, উঠা যায় না।’

অন্য একজন বলেন, ‘যাত্রীরাও কষ্ট হয় এবং গাড়ির অবস্থাও ভালো থাকে না।’

এমন বাস্তবতায়, ২০২৪ সালে দুটি প্যাকেজে ১০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার ও নির্মাণ কাজ শুরু করে ঢালি ও দেলোয়ার হোসেন কনস্ট্রাকশন।তবে আড়াই বছরে কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। কাজ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই সড়কে ভাঙন শুরু হয় নতুন করে। স্থানীয়রা বলছেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও তদারকি না করায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছে যে, কন্ট্রাক্টর কাজ শেষ করার পর যে রডগুলো বের হবে তখন আমরা গাড়ি নিয়ে চলবো কীভাবে? দুইদিন কাজ করে তারপর আবার দুইমাস কাচ বন্ধ থাকে।’

বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতাও পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অনিয়মের প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানায় অনুসন্ধানী দল।

সিলেট কার্যালয়ের দুদক সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘দেড় কিলোমিটার জায়গায় কোনোকিছুই করা হয়নি। এই ভোগান্তি এই এলাকার জনগণকে ভুগতে হবে। কাজের মানে গাফিলতি আছে। অনিয়ম কিছু হয়েছে মর্মে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। আমরা কমিশনকে এ বিষয়ে জানাবো।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অযুহাত, বন্যার কারণে কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা।

ঠিকাদার এমডি দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘দৃষ্টিগোচরে আসছে আমাদের। আমাদের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আমরা এটা সংশোধন করে দেবো। যতটুকু ত্রুটিবিচ্যুতি আছে। কাজটা আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে উঠানোর চেষ্টা করবো। এই এলাকায় বণ্যা বেশি, সেজন্য আমাদের কাজটা দেরি হচ্ছে।’

সিলেটের এলজিইডি সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ কে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের নিয়ম অনুযায়ী তোমাকে জরিমানা করবো, এবং তোমার লাইসেন্স দুই বছরের জন্য বাতিল হবে। এই চিঠিও আমরা ঠিকাদারকে দিয়েছি। একেবারে লিখিত দিয়েছি এবং কাজের ধীরগতির জন্য অনেকবার চিঠি দেয়া আছে।’

ভঙ্গুর রাস্তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন খাত যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতেও।

এসএস