দেড় মাস পানির নিচে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, কমেছে পর্যটক, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

পানির নিচে রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু
ফিচার , ভ্রমণ
এখন জনপদে
0

বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় দেড় মাস ধরে ডুবে রাঙামাটি পর্যটনের আইকন পর্যটন ঝুলন্ত সেতু। নিরাপত্তার কারণে সেতু ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে দৈনিক ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। পর্যটকরাও হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সেতু ডুবে থাকায় রাঙামাটিতে পর্যটকদের উপস্থিতি কমায় পর্যটন খাতেও দেখা দিয়েছে অনেকটাই মন্দাভাব। তবে সেতু কর্তৃপক্ষ বলছেন, পানি সড়ে গেলেই উন্মুক্ত করা হবে পর্যটক চলাচল।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। বছরে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। জনপ্রতি ২০ টাকা প্রবেশ ফি থেকে বাৎসরিক আয়ের অঙ্কে দাঁড়ায় প্রায় ৬০ থেকে ৯০ লাখ টাকা।

কিন্তু হ্রদে পানি বাড়ায় গেল ৩০ জুলাই ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় সেতুতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেন কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই দেড় মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে। প্রতি বছর সেতু ডুবে যাওয়া রোধে সেতুটি আরও উঁচুতে স্থাপনের দাবি জানিয়েছে দর্শনার্থীরা।

আজ (শুক্রবার ১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝুলন্ত সেতু এলাকায় গিয়ে কথা হলে সেতু ভ্রমণ নিয়ে হতাশা জানান পর্যটকরা। চট্টগ্রাম থেকে আসা তরুণ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলছিলেন, ‘আসলেই অনেক খারাপ লাগছে। অনেক দূর থেকে আসলাম সেতু দেখতে। ছবি তুলতে পারছি না। ঘুরতে পারছি না। সেতুটা ডুবে আছে।’

দেলোয়ার হোসেন অভি বলেন, ‘আমরা ৩০ জন আসছি একসাথে। ঝুলন্ত সেতু দেখতে এসেছি। এখন হতবাক হয়ে গেছি। পানির কারণে ঝুলন্ত সেতুর সৌন্দর্য দেখতে পারলাম না। সরকারের কাছে অনুরোধ, সেতুটি আরেকটু উঁচুতে করা দরকার।’

আরও পড়ুন:

মেহেরাজ আলী সজিব বললেন, ‘সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি- ঝুলন্ত সেতুটা যেন সংস্কার করে। যেন ঝড় বৃষ্টি যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসুক এ সেতুর যেন কোনো কিছু না হয়।’

কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল)। তবে ১০৭ ফুট হলেই ডুবে যায় সেতু। মূলত কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য কাপ্তাই হ্রদে পানি ধরে রাখতে হচ্ছে। এতে বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ঝুলন্ত সেতু সহ হ্রদ তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন, কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট বিভিন্ন ধাপে খুলে দিয়ে পানির উচ্চতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে । চলতি মৌসুমে গেল ৫ আগস্ট থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে পানি।

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সর ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘এরইমধ্যে একই স্থানে একটি আধুনিক সেতু নির্মাণে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এটি হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।’

এসএস