বাস্তব রূপ নিচ্ছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর

কক্সবাজার
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ চলছে
এখন জনপদে , আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

জাপানি প্রযুক্তিতে নির্মিত হবে এই বন্দরের টার্মিনাল। এই বন্দর শুধু বাংলাদেশ নয় আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশ ব্যবহার করতে পারবে।

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর অবহেলিত অঞ্চল মাতারবাড়ি। দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর এ দ্বীপকে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন পরিচিতির জানান দিচ্ছে। আর এই বন্দরকে ঘিরে অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ পাওয়ার হাব গড়ার কর্মযজ্ঞে বদলে যাচ্ছে মাতারবাড়ির দৃশ্যপট।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বন্দর শুধু বাংলাদেশ নয় আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশ ব্যবহার করতে পারবে। সমুদ্র, রেল ও সড়ক পথে সমন্বিত যোগাযোগের কারণে অর্থনীতিতে এই বন্দর বড় ভূমিকা রাখবে।

১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। একইসঙ্গে নির্মিত বন্দরের ১৪ কিলোমিটার র্দৈঘ্য ও সাড়ে তিনশ’ মিটার প্রশস্ত চ্যানেলের উদ্বোধন করবেন। যা পাড়ি দিয়ে ১৪ মিটার গভীরতার কয়লাবাহী জাহাজ এখন এ বন্দরে ভিড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তীর থেকে সাগরের কয়েক কিলোমিটার ভেতরে এই কৃত্রিম চ্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে।

জাপানের কাশিমা বন্দরের আদলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের টার্মিনাল নির্মিত হবে। এর উপরিভাগের কাঠামো সম্পূর্ণ ইস্পাতের হবে, যা নোনাজল প্রতিরোধী ও অনেক বেশি টেকসই। আর এই নকশায় প্রতিটি ব্লক আলাদা হওয়ায় মেরামতও সহজ হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কতৃর্পক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, 'এটি একটি ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হবে। মাদার ভেসেলগুলো আসতে পারবে, যে সুবিধা চট্টগ্রাম বন্দরে এখন নেই।'

মাতারবাড়ি বন্দরে ১৬ মিটার গভীরতার ও ৩৫০ মিটার লম্বা বড় আকৃতির জাহাজ ভেড়ার সক্ষমতা রয়েছে। এসব জাহাজ ৮ থেকে ১০ হাজার টিইউএস কনটেইনার ও এক লাখ টনের বেশি পণ্য নিয়ে বন্দরে ভিড়বে। যা চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজের চেয়ে তিন গুণের বেশি পণ্য নিয়ে ভিড়বে । ফলে ব্যবসায়ীদের আর সিঙ্গাপুর, কলম্বো কিংবা বিশ্বের অন্য ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরের উপর নির্ভর করতে হবে না। এতে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় অনেক কমে আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য মো. জাফর আলম বলেন, 'সমুদ্রের পাড় থেকে চ্যানেলটিকে ৩-৪ কিলোমিটার ভেতরে নিয়ে বন্দরটি করা হচ্ছে। এতে করে কমবে পলি জমা এবং জীববৈচিত্র্যের পরিবেশের ক্ষতিও হবে না। যা এই প্রকল্পের সঙ্গে দারুণভাবে সমন্বয় করা হয়েছে।'

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়ক ও রেলপথসহ গড়ে তোলা হচ্ছে সুপরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা। একইসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এলএনজি টার্মিনাল, ৩৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন ভারী শিল্প কারখানা হচ্ছে।

সেজু