জীবন চলে আপন গতিতেই। ব্যতিক্রম নয় কাশ্মীরও। তাই অস্ত্রবিরতিতে চিরবৈরী দুইদেশের সম্মতির খবর মেলামাত্র ছন্দে ফেরার তোড়জোড় শুরু ভূস্বর্গে।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জেরে শনিবার সন্ধ্যায় অস্ত্রবিরতিতে সম্মতি দেয় দুই প্রতিবেশী দেশ। এরপরই সপ্তাহভর টানটান উত্তেজনার সংঘাতবিহীন রাত কাটান ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কুপওয়ারা আর উরির বাসিন্দারা।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, বাজার ধীরে ধীরে খুলছে। কিন্তু যে ক্ষয়ক্ষতি গত সাতদিনে আমাদের এলাকায় হয়েছে, তা অকল্পনীয়।’
আরো পড়ুন:
আরেকজন বলেন, ‘রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। খুব বেশি কিছু ঘটেনি। এর আগে তো কতোগুলো মিসাইল আর আরো কতো ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছে। কিন্তু গতকাল কিছুই হয়নি।’
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে রোববার (১১ মে) থেকেই দোকানপাট খুলতে শুরু করে। বিরামহীন গোলাবর্ষণের ক্ষত সীমান্তের চাকোঠি গ্রামজুড়ে। ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করে দোকানপাট খুলতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে মনে হলেও সহিংসতা থেকে বাঁচতে ভিটেমাটি ছেড়ে যাওয়া অনেকেরই সংশয়, ফেরা নিরাপদ হবে কি না।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমরা তো অবশ্যই আবার দোকানপাট খুলতে শুরু করবো। কিন্তু এতে কিছুদিন সময় লেগে যাবে। আমাদের অনেকেই অন্যান্য এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের ফিরতে সময় লাগবে। আর দ্বিতীয় বিষয় হলো যে অস্ত্রবিরতির আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই এবং সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা না হলে অনেকেই ফিরবে না বলে মনে হয়।’
আরো পড়ুন:
কাশ্মীর সীমান্তের দু'পাশে গোলাবর্ষণ বন্ধে সম্মত হয়েছে দুই পরাশক্তি ঠিকই; কিন্তু সীমান্ত নিয়ে কয়েক দশকের পুরোনো বিতর্কের রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া শান্তি টিকবে কতোদিন, তা নিয়ে সন্দিহান বাসিন্দারা। স্থানীয়রা বলছেন, সাময়িক অস্ত্রবিরতি যথেষ্ট নয়।
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটককে নিহতের ঘটনায় সীমান্তে দুই সপ্তাহ গোলাগুলির পর, গেলো বুধবার সরাসরি যুদ্ধে জড়ায় ভারত ও পাকিস্তান। এরপর শনিবার আসে সাময়িক অস্ত্রবিরতির ঘোষণা। প্রায় তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী চারদিনের সহিংসতায় মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে দুই দেশ, প্রাণ গেছে অর্ধশতাধিক মানুষের।