বহু কাঠখড় পুড়িয়ে তিন বছর পর যুদ্ধবিরতির আলোচনা। নিজেই প্রস্তাব দিলেন সরাসরি আলোচনার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেই সরে গেলেন অবস্থান থেকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শেষ সময়ে আর আসলেন না তুরস্কে। পরিবর্তে পাঠালেন প্রতিনিধিদল। যেখানে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই হোয়াইট হাউজেরও।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবারই তুরস্কে পৌঁছে গেছে রুশ প্রতিনিধিদল। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তাম উমেরভকে প্রধান করে পৌঁছেছে কিয়েভের প্রতিনিধিদলও। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অভিযোগ, পুতিনের আলোচনায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে, রাশিয়াই যুদ্ধবিরতি চায় না। জানান, রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি চায় কিয়েভ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘নিম্নমানের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে রাশিয়া। এরপরও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সম্মান করি। কেউ তো যুদ্ধ থামানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ইস্তাম্বুলে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছি কিন্তু সবাই যাবে না। রাশিয়া এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চায় না। কারণ রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কোন চাপ নেই। যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা না হয়, চাইবো রাশিয়াকে আরও চাপ দেয়া হোক।’
জেলেনস্কি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর তুরস্কের উচিত রাশিয়ার অসম্মান বোঝার চেষ্টা করা। যে কারণে পুতিন আর রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো ইউরোপের চাপ প্রত্যাশা করেন তিনি।
এদিকে যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুগান্তকারী কোন সিদ্ধান্তের জন্য অবশ্যই দুই পক্ষকে মুখোমুখি বসতে হবে। তিনি বলেন, এজন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও আলোচনায় বসা উচিত। এর আগে আত্মবিশ্বাসী ট্রাম্প বলেন, পুতিনের সঙ্গে না বসা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে কোন সমাধান আসবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাস্প বলেন, ‘আমি হতাশ। মাত্র ৪ ট্রিলিয়ন ডলার নিয়েছি মধ্যপ্রাচ্য থেকে। প্রতিনিধিদল নিয়ে কিছু জানি না। কিন্তু পুতিন আর আমি একসঙ্গে না বসলে এই যুদ্ধের কোন সমাধান আসবে না। কারণ ভ্লাদিমির পুতিন যাবে না। আমার মনে হয় না এখন কিছু হবে। কিন্তু আমরা একসঙ্গে এই সমস্যার সমাধান করবো।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘বেশি কিছু আশা করছি না। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ভ্লাদিমির পুতিনের একসঙ্গে বসা উচিত। প্রেসিডেন্ট এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য অস্থির হয়ে গেছেন। রাশিয়া যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, তাতে যুগান্তকারী কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই, কিন্তু আমি শতভাগ ভুল হতে চাই। কারণ তারা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য সম্মতি জানিয়েছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি অংশগ্রহণ প্রয়োজন।’
পাঁচ দিনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব শেষে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পথ তৈরি হলেও বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন জানায়, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সরাসরি অংশ নিচ্ছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রতিক্রিয়ায় ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধের কোন ইচ্ছা বা পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই। যুদ্ধের তিন বছর পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি এই আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট নিজেই।