যত দিন যাচ্ছে ততই হিংস্র হয়ে উঠছে ইসরাইলি বাহিনী। মে মাসের শুরুতে সামরিক অভিযান জোরদারের পর প্রতিদিন শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে তারা। বোমা বর্ষণ ও বিমান হামলার পাশাপাশি চলছে স্থল অভিযান। হামলা থেকে রেহাই পায়নি স্কুল, শরণার্থী শিবির এবং হাসপাতালও। এরই মধ্যে ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার ৯৫ শতাংশ স্কুল।
এমন অবস্থায় গাজায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, এই প্রস্তাবে যুদ্ধ শেষ হওয়ার একটি পথ আছে। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে অর্ধেক জীবিত জিম্মির মুক্তি এবং নিহত অর্ধেক জিম্মিদের মরদের ফেরত দেয়ার কথা বলা আছে। তবে যুদ্ধবিরতি কতদিনের মধ্যে হবে তা স্পষ্ট করেননি উইটকফ।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে উইটকফ জানান, চুক্তিটি এখনো আলোচনার টেবিলে। প্রস্তাব গ্রহণে আহ্বানও জানানো হয়েছে হামাসকে। এ সময় তিনি বলেন, ৭০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ১০ জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে হামাসের দাবি সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র রাখেনি।
এদিকে, হামাসের ঘনিষ্ঠ ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হলেও ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করেছে। গেল কয়েকমাস ধরেই হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। যদিও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, ইসরাইলের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে জিম্মিদের মুক্তি। আজ না হয়, কাল সব জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
১৯৬৭ সালের ২৬ মে জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চল দখল করে ইসরাইল। দিনটিকে জেরুজালেম দিবস হিসেবে পালন করে তারা। ইসরাইলের পতাকা হাতে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় শত শত ইসরাইলি। সমাবেশে যোগ দেন ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির। এরকিছু সময় পরই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি ও সংঘর্ষ হয়। মিছিলকারীরা ফিলিস্তিনিদের দোকান বন্ধ করতে হয়রানি করে। এসময় সংবাদ কর্মীদের ওপরও আক্রমণ করে ইসরাইলিরা।
গাজায় মানবিক সহায়তার ট্রাক প্রবেশ করলেও, গাজা সিটিসহ উত্তরাঞ্চলে এখনো কোনো সাহায্য পৌঁছায়নি। যেখানে এক কেজি ময়দার দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ মার্কিন ডলারে। খাবারের জন্য অপেক্ষায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, গুরুতর আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গাজার হাসপাতালগুলোতে মজুত থাকা প্রয়োজনীয় ওষুধও শেষ পর্যায়ে। এদিকে, গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী।