যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কানাডায় একতরফা ব্যবসা করে আসছে বহু বছর ধরে। তাদের আয়ের ওপর তিন শতাংশ হারে ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্স আরোপ করে অটোয়া। যা গুগল, অ্যামাজন, মেটা, এয়ার বিএনবি ও উবারের মতো বড় বড় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর প্রযোজ্য হচ্ছে ৩০ জুন থেকে।
এটি গত তিন বছর আগে থেকে পরিশোধ করতে হবে। প্রাথমিকভাবে কোম্পানিগুলোর ওপর করের পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার।
মাথার ওপর থাকা এই বকেয়া কমাতে এক হাত নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্ক নিয়ে যখন দুই সরকার দরকষাকষি করছিল, তখন তা পুরোপুরি ভেস্তেই দিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
কানাডার আচরণকে আক্রমণাত্মক হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, অটোয়া সমঝোতা করার মতো নয়। তাই তিনি কয়েক দিনের মধ্যে নতুন শুল্কের পরিমাণ ঘোষণা করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘না, তারা এভাবে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কর আরোপ করতে পারে না। যার আকার অনেক বড়। আমার ধারণা, তারা পিছু হটবে। যদি তারা শুল্ক প্রত্যাহার না করে, আমার কিছুই যায় আসে না। আমাদের কাছে সবই আছে। আমরা কানাডার সঙ্গে ব্যবসা করি, কিন্তু সেটা পরিমাণে বেশি নয়। বরং তারাই আমাদের সঙ্গে বেশি ব্যবসা করে।’
কয়েকদিন আগে জি সেভেন বৈঠকেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ইস্যুতে একটা সুরাহা হওয়ার বিষয়ে কথা হয়। আসার কথা ছিল নতুন পথ। কিন্তু দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এখন সেখানে বিচ্ছেদের সুর। কেননা নিজেদের অবস্থানে কানাডাও অনড়।
কানাডার অর্থমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফিলিপ শ্যাম্পেন বলেন, ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্স নতুন নয়। এটা আমরা জি সেভেন বৈঠকে বলেছি, এমনকি ওয়াশিংটনে বৈঠকেও জানিয়েছিলাম। ইউরোপও একইভাবে শুল্ক আরোপ করেছে। এর জন্য আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার কোনো যুক্তি দেখি না।’
তবে অনেক ব্যবসায়িক সংগঠন ও প্রাদেশিক নেতা বলছেন, ট্যাক্সটি আপাতত স্থগিত করা উচিত, যাতে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ না হয়। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের ঘোষণার পর মুদ্রা বাজারে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে।
গেলো ফেব্রুয়ারি থেকে মার্কিন শুল্ক ইস্যুকে কেন্দ্র করে কানাডার অর্থনীতি বেশ নাজুক অবস্থানে গিয়ে ঠেকেছে। বেকারত্ব, অর্থনৈতিক সংকট ভোগাচ্ছে বাসিন্দাদের। প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বিষয়গুলো সহজ করে আনার চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যে নতুন শুল্ক চাপ সামলে ওঠা রীতিমতো দুষ্কর, বলছেন বিশ্লেষকরা।