ট্রাম্পকে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা কমার কৃতিত্ব দিলেন পুতিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
বিদেশে এখন
0

ইউক্রেনের সঙ্গে তৃতীয় দফায় অস্ত্রবিরতির আলোচনায় বসতে রাজি হলেও দেশটিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের সংকল্পে এখনো অটুট রুশ প্রেসিডেন্ট। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আগের চেয়ে স্থিতিশীল হয়েছে দাবি করে ট্রাম্পকে এর কৃতিত্ব দিয়েছেন পুতিন। এ ছাড়া, ইউক্রেনে রাশিয়ার সাফল্যের কারণে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়িয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো, এমন মন্তব্যও করেছেন তিনি।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আশা করছেন, কোনো না কোনো উপায়ে এ সংঘাত বন্ধ হবে। যদিও তিনি জানেন না যে, উপায়টি আসলে কী। অন্যদিকে, ইউক্রেনের মিলিটারি এয়ারফিল্ডে সফলভাবে হাইপারসনিক মিসাইল হামলা চালানোর দাবি রাশিয়ার।

ইউরোপের দেশগুলো যখন ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ও সহায়তার পাল্লা ভারী করতে ব্যস্ত, তখন জেলেনস্কি বাহিনীর ওপর আবার চড়াও হয়েছে পুতিন সেনারা। সামরিক ঘাঁটি ছাপিয়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র পৌঁছে যাচ্ছে ইউক্রেনের আবাসিক অঞ্চলগুলোতেও।

শুক্রবার (২৭ জুন) ভোররাতে ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসার একটি ভবনে আঘাত হানে রুশ মিসাইল। হামলায় নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রয়টার্স। ঐ রাতেই ভবনটি খালি করে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।

এ ছাড়াও, একই দিনে ইউক্রেনের মিলিটারি এয়ারফিল্ডে হাইপারসনিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা বিভাগ জানায়, হামলায় দূরপাল্লার কিঞ্জাল মিসাইল ছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় আকাশযান। তবে হামলার স্থান ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কিছু জানায়নি কিয়েভ বা মস্কো।

দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা যখন বাড়ছে, তখন একদিকে পুরো ইউক্রেন দখলের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে কিয়েভের সঙ্গে তৃতীয় দফায় অস্ত্রবিরতির আলোচনাসহ তিন হাজার ইউক্রেনীয় সৈনিকের মরদেহ ও কারাগারে আটক বন্দিদের বিনিময়ে সম্মত হয়েছেন তিনি। 

এদিন পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সাফল্যে নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্ররা, মস্কো ভীতি থেকেই বাড়ানো হচ্ছে সামরিক বাজেট।

তবে ইউরোপের দেশগুলোর কিয়েভে অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্তে চটে গিয়ে পুতিন বলছেন, পশ্চিমাদের সমাধানগুলো সবসময়ই একতরফা।

পুতিন বলেন, ‘আমরা তৃতীয় দফায় আলোচনায় বসার জন্য প্রস্তুত। সমঝোতা করতেও বাধা নেই। আলোচনার স্থান নির্ধারণ করা বাকি আছে। আশা করি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এ পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করবেন ও তার অবস্থানে অবিচল থাকবেন। ইস্তাম্বুলে বৈঠকের আয়োজন হলে আমরা তাতে অংশ নিতে প্রস্তুত।’

তবে সংঘাত বন্ধে এখনো পুতিনের ওপর বিশাল আস্থা রাখছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের ধারণা, রুশ প্রেসিডেন্ট হয়তো নিজেই এমন কোনো ব্যবস্থা নেবেন যাতে যুদ্ধ আপনা-আপনিই বন্ধ হয়ে যায়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সমাধান খোঁজা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকতে চেয়েছিল। আমি তাকে বলেছি, ইরানের বিষয়ে ভাবতে হবে না। বরং আপনারা নিজেদের বিষয়ে ভাবুন। আমি নিশ্চিত এমন কিছু একটা হবে যাতে যুদ্ধ এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।’

এদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর পর সামরিকখাতে রাশিয়ার আকাশচুম্বী ব্যয় নিয়ে দেশটির জনগণের মধ্যে যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল তা কমানোর পরিকল্পনা করছে ক্রেমলিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির কারণে রাশিয়া বাজেটগত চাপের সম্মুখীন হচ্ছিল এবং এ কারণে মুদ্রাস্ফীতিও দেখা গেছে। পুতিনের দাবি, ভবিষ্যতে এই ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা আছে মস্কোর।

এসএইচ