হামাস চায় চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতি; গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া ভবনের সারি
বিদেশে এখন
0

চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা চাইছে হামাস। ২-১ দিনের মধ্যেই মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। এরইমধ্যে, গাজায় হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দিনভর হামলায় ফের শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে গাজায়। যার মধ্যে অর্ধেক মানুষই ত্রাণ সংগ্রহের সময় হত্যার শিকার হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, গাজাবাসীকে সুরক্ষিত দেখতে চান তিনি।

গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে মনোযোগ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনটাই খবর মার্কিন গণমাধ্যমে। আগামী সপ্তাহে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। টাইমস অফ ইসরাইলের প্রতিবেদন বলছে, প্রায় ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধ শেষ করার সরাসরি নিশ্চয়তা চাইছে হামাস। এ বিষয়েই নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন ট্রাম্প।

বর্তমানে ফিলিস্তিনের বাকি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করার কথা জানিয়েছে হামাস। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেলেই নেতানিয়াহুর হোয়াইট হাউজ সফরের আগেই ইতিবাচক জবাব পাঠাবে স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।

এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, গাজাবাসী নরকের যন্ত্রণা ভোগ করছে। তাদের সুরক্ষিত দেখতে চান তিনি। চুক্তির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানা যাবে একদিনের মধ্যেই।

তিনি বলেন, ‘আমি গাজার বাসিন্দাদের সুরক্ষিত দেখতে চাই। তাদের নিরাপদে থাকা দেখতে চাই। তারা নরকের যন্ত্রণা ভোগ করছে।’

তবে, গাজাবাসীকে সুরক্ষিত দেখতে চাইলেও, উপত্যকায় হত্যাযজ্ঞ থামানোর কোনো নাম নেই ইসরাইলি সেনাদের। বৃহস্পতিবারও, দিনভর আইডিএফের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক ফিলিস্তিনি। যার মধ্যে অর্ধশতাধিকই প্রাণ হারিয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহের সময়। নিরস্ত্র বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন গুলি চালাচ্ছে অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এপি। তবে ২ কর্মীর বরাত দিয়ে ছাপানো বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনকে অস্বীকার করেছে জিএইচএফ।

গাজাবাসীরা বলেন, ‘হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে তাঁবু আমাদের মাথার ওপর পড়লো। আল্লাহই আমার জন্যে যথেষ্ট।’

অপর একজন গাজাবাসী বলেন, ‘আমি ত্রাণ খুঁজতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি আমার ভাইয়ের সন্তানরা আর বেঁচে নেই। যুদ্ধ শুরুর পর এতদিন তারাই আমার স্বজন ছিলো।’

এদিকে যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো সীমান্তবর্তী কিবুৎজ অঞ্চল পরিদর্শনে যান বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত ইসরাইলি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। এসময় জিম্মিদের জীবিত ঘরে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে নেতানিয়াহুর সফর ঘিরে বিক্ষোভ করেন ইসরাইলিরা। এ সময় অবিলম্বে উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিও জানায় তারা।

এ সময় তারা বলেন, ‘তাকে মাফ চাইতে হবে। যারা বেঁচে ফিরেছেন, সবার পায়ে চুমু খেয়ে ক্ষমা ভিক্ষা চাইতে হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী। তাই এর দায় তাকে বহন করতে হবে। তবে এখন জিম্মিদের ফিরিয়ে আনাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।’

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের প্রথম দায়িত্ব সব জিম্মিকে ঘরে ফিরিয়ে আনা। এখনো ২০ জন জীবিত আছে। সবাইকে আমরা ঘরে নিয়ে আসবো। পাশাপাশি এই এলাকা পুনর্গঠন করা হবে। সবাইকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হবে।’

ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোকে ইহুদি সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ও বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ দূত। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি ইসরাইল।

ইএ