১২ দিনের ইরান-ইসরাইল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে আলোচনায় পরমাণু চুক্তি প্রসঙ্গ। এখনো তেহরানকে বৈঠকে বসাতে রাজি করাতে পারেনি ওয়াশিংটন। এমন পরিস্থিতিতে ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে চাপে রাখতে নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে পশ্চিমারা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদন বলছে, ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছাতে আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। ডেডলাইনের মধ্যে চুক্তিতে না পৌঁছালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইরানের ওপর আরোপ করা হবে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা। যা ২০১৫ সালে চুক্তির সময় প্রত্যাহার করা হয়।
জাতিসংঘের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা সক্রিয় করতে প্রয়োজন ৩০ দিন। আগামী অক্টোবরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতির দায়িত্ব নিবে রাশিয়া। তাই এর আগেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায় পশ্চিমারা। তাই ইরানকে চুক্তিতে আসার জন্য আগস্টের শেষ পর্যন্ত সময় দেয়া হচ্ছে।
এদিকে ট্রাম্পের দাবি, ইরান সমঝোতা চাইলেও তাড়াহুড়ো করছেন না তিনি। বাহরাইনের ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে বৈঠকের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস হওয়ায় বল এখন পেজেশকিয়ান প্রশাসনের কোর্টে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তারা সমঝোতা চাইছে। তবে আমাদের কোনো তাড়া নেই। আমরা তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারতাম। তাদের অনীহার কারণে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। তাই এখন কোনো তাড়া নেই। ইরান সমঝোতা চাইলে আমরা আছি।’
সাম্প্রতিক সময়ে ইরানে আবারও হামলা চালানোর বিষয়ে বেশ কয়েকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরাইলের শীর্ষ রাজনীতিবিদরা। তবে সামরিক আগ্রাসন চালানো হলে তার জবাব দিতে তেহরান প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার দাবি, ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে ইরান।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ‘আমাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ক্যান্সার। যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পোষা প্রাণীকে আমরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছি। ইসরাইলে তথ্য প্রচারের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই এ বিষয়ে জানতে পারবেন। প্রয়োজন হলে আবারও জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত।’
তেহরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমর্থন অব্যাহত রাখবে বেইজিং। ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াংই। এসময় বল প্রয়োগের মাধ্যমে পশ্চিমাদের সমস্যা সমাধানের নীতিকে সমালোচনা করেন তিনি।