গাজায় ইসরাইলি হামলা: আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরাইলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা
বিদেশে এখন
0

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নতুন করে নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি। যার মধ্যে ২৭ জনই গাজা সিটির। আজ (সোমবার, ২৫ আগস্ট) সকালে খান ইউনূসের নাসের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দখলদার বাহিনীর হামলায় এক সাংবাদিকসহ নিহত হয়েছে ৮ জন। ইসরাইলি অভিযানে তীব্রতা বাড়ায় গাজার দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। এ অবস্থায় তাদের মাথার ওপর প্রয়োজনীয় তাঁবুর ব্যবস্থা করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

গাজার যতদূর চোখ যায় শুধুই ধু-ধু মরুভূমি। একের পর এক হামলায় আকাশছোঁয়া ভবনগুলোও মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। যে তাঁবুগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিল অসহায় ফিলিস্তিনিরা, এবার সেখানেও টার্গেট করে অভিযান শুরু করেছে তারা। তাই বাধ্য হয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটছে গাজাবাসী।

ইসরাইলি হামলার জেরে গাজার প্রায় ২৪ লাখ ফিলিস্তিনি মানবেতর দিনযাপন করছেন। এবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে স্থানান্তর হলে বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য ন্যূনতম তাঁবুর ব্যবস্থা করা যাবে না বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তথ্যমতে, গাজা উপত্যকায় প্রায় আড়াই লাখ তাঁবুর দরকার ছিল, যেখানে কেবল ১০ হাজারের ব্যবস্থা হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ৪ শতাংশ।

এরই মধ্যে গাজার প্রায় ৭৭ শতাংশ দখলে নিয়েছে তেল আবিব। উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি সেনারা নতুন করে অভিযান শুরু করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনিদের জন্য। জয়তুন ও জাবালিয়া শহর ও আশপাশের এলাকায় ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। তাই এ শহর থেকে কোনোরকমে প্রাণ নিয়ে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।

শুধু ইসরাইলি হামলা নয় ফিলিস্তিনিদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্ভিক্ষ। যেখানে খাবারের অভাবে প্রতিদিনই মৃত্যু হচ্ছে গাজাবাসীর। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষে গাজার প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার মানুষ খাদ্যাভাবে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে উপত্যকাটির সমন্বিত খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ।

এ পরিস্থিতিতে ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতির শর্তের কথা মনে করিয়ে দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই কেবল সব বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে বলে জানায় তারা।

আরও পড়ুন:

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশাল র‍্যালি হয়েছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে। যেখানে গাজাবাসীর জন্য ১০০ মিলিয়ন রিঙ্গিত সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

এদিকে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগালে। সেসময় গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা। একই সঙ্গে ইসরাইল সরকারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করারও আহ্বান জানান তারা।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সেনেগাল সরকারের কাছে আহ্বান ইসরাইলের সঙ্গে যেন কূটনৈতিক এ বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়। আরব দেশগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন ফিলিস্তিনির পাশে থাকেন।’

আরকজন বলেন, ‘গাজায় নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। আর আন্তজার্তিক সম্প্রদায় তা মুখ বুঝে সহ্য করছে।’

গত কয়েকদিন ধরেই গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। যেখানে অংশ নিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

এসএইচ