বিয়ে করতে এসে ইরানে আটকা কানাডিয়ান যুগল

কানাডিয়ান যুগল
মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
1

শুভ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইরান-ইসরাইল সংঘাত। সুদূর কানাডা থেকে বিয়ে করতে এসে ইরানে আটকা পড়েন এক কানাডিয়ান যুগল। তবে শেষ পর্যন্ত বিয়েটা আর করা হয়নি। তাই হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে দেশে। অপরদিকে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দলে দলে দেশত্যাগের পাল্লা ভারি হচ্ছে ইরানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের।

ইরান-ইসরাইল উত্তেজনার সপ্তাহ পার হলেও মিলছে না সমাধান। উল্টো তেল আবিবের সঙ্গে যৌথ হামলার পরিকল্পনা আঁটছে মার্কিন শিবির। রক্তক্ষয়ী এই দ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বেগ ঝরছে বিশ্ব নেতাদের কণ্ঠেও। এমন পরিস্থিতিতে দলে দলে তেহরান ছাড়তে মরিয়া ইরানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা।

চলমান সংঘাতের প্রভাব ছুঁয়েছে এই কানাডিয়ান যুগলকেও। তাদের বিয়েতে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে সংঘাতময় এই পরিস্থিতি। ইরানে বিয়ে করতে আসলেও তা সম্ভব না হওয়ায় ভেস্তে যায় সাজানো সব পরিকল্পনা। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তেহরানে ফিরেই বিয়ের কাজ শেষ করতে চান তারা।

বিয়ের বর বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় আমাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। আমরা কানাডা থেকে এসেছি।’

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) তুরস্কের কাপিকয় সীমান্ত দিয়ে দেশ ছেড়েছেন ইরানি বসবাসকারীরা। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ইস্তাম্বুলে পৌঁছতে দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণের সাথে বেড়েছে ভোগান্তি। তেহরান ছাড়ার দলে যোগ দিয়েছে পোল্যান্ডের নাগরিকরাও। নিরাপদে দেশে ফিরে স্বস্তিও প্রকাশ করেন কেউ কেউ। বলেন, তেহরান এখন জনশূন্য।

পর্যটকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘২৮ ঘণ্টা ধরে ভ্রমণ করছি। এই পরিস্থিতির কারণে ইস্তাম্বুল পৌঁছাতে আরও ২৪ ঘণ্টা লাগতে পারে। ইরানের পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ। আশা করি শিগগিরই এই যুদ্ধ শেষ হবে।’

অন্য একজন বলেন, ‘যুদ্ধ পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ জিনিস। যুদ্ধের কারণে আমাদের যাযাবর জীবনযাপন করতে হয়। সবাই এখন সীমান্ত দিয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করছে

পোল্যান্ড থেকে ইরানে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত আমরা পোল্যান্ডে পৌঁছাতে পেরে আমরা খুবই খুশি। কারণ ইরানের পরিস্থিতি প্রতি ঘণ্টায় অবনতি হচ্ছে। আমাদের কাছে কোন ইন্টারনেট ব্যবস্থা ছিল না।’

এদিকে গত কয়েকদিনে তাফতান সীমান্ত দিয়ে ইরানে অধ্যয়নরত ২১৪ জন শিক্ষার্থীসহ কয়েকশ’ নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়াও ইরাকে আটকে পড়া ২৬৮ জনকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে দুটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জার্মানিও গত দুই দিনে উড়িয়ে নিয়েছে ৩৪৫ জন নাগরিককে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে ইরানে থাকা ১১০ শিক্ষার্থীকে আর্মেনিয়া থেকে দেশে ফিরিয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন ইসরাইল ও ইরান থেকে ফিরতে চাওয়া নাগরিকদের জন্য বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অন্যদিকে ইসরাইল থেকে ৪০০ জনকে সরিয়ে নিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। মিশরের মাধ্যমে গ্রিস তাদের ১৪১ জন নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে। সেই সাথে অন্যান্য দেশগুলোও নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপদে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।

এসএস