গাজা দখল ইস্যুতে মত দিতে নারাজ ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণরূপে দখলে ইসরাইলি পরিকল্পনার সমর্থন বা বিরোধিতা করা থেকে বিরত রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানালেন, এসব বিষয় পুরোপুরি ইসরাইলের ওপর নির্ভর করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধা নিবারণের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পরিকল্পনার বিরোধিতায় পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান। যদিও গাজা দখলের লক্ষ্যে অটল নেতানিয়াহু। এদিকে গতকাল (মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট) দিনভর হামলায় ৫৮ ত্রাণ প্রত্যাশীসহ গাজায় নিহত অন্তত ৮৩ ফিলিস্তিনি।

সম্পূর্ণরূপে উপত্যকা দখলে ইসরাইলের পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে আবারও আলোচনায় গাজা যুদ্ধ। পশ্চিমারা এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করলেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

উপত্যকা সম্পূর্ণ দখলের পক্ষে না বিপক্ষে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার দাবি, বিষয়টি ইসরাইলের ওপর নির্ভর করছে। ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধা নিবারণের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনিদের খাদ্য সরবরাহের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ মিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছে। আমি এখন এ বিষয়ে মনোনিবেশ করেছি। তবে বাদবাকি বিষয়গুলো ইসরাইলের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করছে।’

যতদ্রুত সম্ভব পরিকল্পনা কার্যকরে সেনাপ্রধানকে চাপ দিচ্ছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বেঁকে বসেছেন আইডিএফের চিফ অফ স্টাফ। টাইমস অফ ইসরাইলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, উপত্যকা দখলের পরিকল্পনাকে সেনাদের জন্য ফাঁদ হিসেবে মনে করছেন সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। এছাড়াও জিম্মিদের জীবিত ফেরত পাবার সম্ভাবনা নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। সূত্র বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে মন্ত্রিসভা প্রস্তাবটি পাস করলে পদত্যাগ করতে পারেন আইডিএফ প্রধান। যদিও নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অটল ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। তবে গাজায় শত্রুদের পরাজিত করা জরুরি। জিম্মিদের মুক্তির পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে গাজা যেন ইসরাইলের জন্য হুমকি হিসেবে আবির্ভূত না হয়। আমরা এই উদ্দেশ্যগুলো পূরণ করবো।’

উপত্যকা দখলের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলেও আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। মঙ্গলবার দিনভর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি। যাদের বেশিরভাগই ত্রাণ প্রত্যাশী। এদিকে, মিশরের নেতৃত্বে বিমানের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম চলছে। যদিও ত্রাণের পরিমাণকে অপর্যাপ্ত বলছে জাতিসংঘ।

ওসিএইচএর মুখপাত্র জেন্স লায়েরকে বলেন, ‘বিন্দু বিন্দু পরিমাণ মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে প্রশংসা করা কিংবা এ কারণে গা ছেড়ে বসে থাকা বড় ভুল হবে। কারণে এমন বিষয় আমরা আগেও দেখিছি। বিপুল সংখ্যক মানুষকে খাদ্য থেকে বঞ্চিত করে তুচ্ছ পরিমাণ লোক দেখানো ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে।’

গোটা ইউরোপ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রদানে মনস্থির করলেও ব্যতিক্রম লাটভিয়া। মঙ্গলবার ইসরাইল সফরকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট জানান, বর্তমান অবস্থায় ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি প্রদানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। তাই এমন কোনো পরিকল্পনা নেই লাটভিয়ার।

লাটভিয়ার প্রেসিডেন্ট এডগার্স রিঙ্কেভিক্স বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্বিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কোনো সমাধান নয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের রেজুলেশন ছাড়া এর কোনো মূল্য নেই। তাই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রদানের পরিকল্পনা নেই লাটভিয়ার।’

এদিকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার তেল আবিবের মহাসড়ক অবরোধ করে ইসরাইলিরা। এসময় বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়ার সময় শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ। ধরপাকড়ের পাশাপাশি পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে।

এসএস