মানিকগঞ্জে সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ টাকা

মানিকগঞ্জ
সবজির বাজার
এখন জনপদে , কাঁচাবাজার
বাজার
0

কয়েকদিন পর পর টানা বৃষ্টির কারণে মাঠের সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে মানিকগঞ্জের পাইকারি আড়তগুলোতে। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ টাকা পর্যন্ত।

এমন চিত্র দেখা গেছে মানিকগঞ্জের ভাটবাউর আড়তে। আড়তজুড়ে পেঁপে, কচুর মুখি ও লেবু ছাড়া বাকি প্রায় সব ধরনের সবজির দামই চড়া। যেখানে এগুলো কেজিপ্রতি ২০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে অন্যান্য সবজির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে-বেগুন ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, শসা ৪৫ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৭০ টাকা।

স্থানীয় কৃষক আবদুল মালেক বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে আমাদের জমির অধিকাংশ সবজির খেত পচে গেছে। বিশেষ করে বেগুন, ঢেঁড়স, শসা ও লাউয়ের খেত প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এখন নতুন করে চাষ করলেও ফলন পেতে সময় লাগবে আরও দেড় থেকে দুই মাস।’

আরেক কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, মাঠে পানি জমে সবজি গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। নতুন সবজি জন্য রোপণ করেছিলাম সেগুলোর অবস্থাও ভালো না।

ভাটবাউর আড়তের পাইকার আলী হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি হওয়ার আগে প্রতিদিন আমি লাখ সবজি কিনতাম, এখন তা কমে অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে।’

আরও পড়ুন:

আরেক পাইকার লাল মিয়া বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহেই সবজির দাম হু হু করে বাড়ছে। গত সপ্তাহে যেসব সবজি ৫০-৬০ টাকা বিক্রি করেছি সেগুলো এখন ৭০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। আগে এক কেজি বেগুন ৪০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হতো, এখন সেটা ৫৫-৬০ টাকা ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে। তবে, লেবু, পেঁপে ও কঁচুর মুখির দাম নাগালের মধ্যেই আছে।’

শহর কাঁচা বাজারের খুচরা বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকারি আড়তে দাম বেশি হওয়ায় আমাদেরও খুচরা দামে রাখতে হচ্ছে বেশি। ফলে ক্রেতাদের সাড়া কমে গেছে।’

আরেক বিক্রেতা আজিজুল হক বলেন, ‘আগে যেখানে ২০০ টাকায় ৪-৫ কেজি সবজি কিনতে পারতো মানুষ, এখন সেখানে ২-৩ কেজি কিনতেই পুরো টাকা লেগে যাচ্ছে।’

ক্রেতা সুমনা আক্তার বলেন, ‘একসাথে বাজার করার মতো আর পারি না। আগে ৫০০ টাকায় পুরো সপ্তাহের সবজি হয়ে যেত, এখন তিনদিনও চলে না।’

অন্য ক্রেতা মনোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সবজির এই দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

টানা বৃষ্টিতে মাঠের খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। এতে পাইকারি থেকে শুরু করে খুচরা বাজার পর্যন্ত সবজির দাম বেড়েছে হু-হু করে। কৃষক, ব্যবসায়ী আর ক্রেতা তিন পক্ষই এখন বৃষ্টির এই ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

সেজু