তহবিল সংকটে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের শঙ্কা

কক্সবাজার
কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প
দেশে এখন
0

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য চলতি বছর জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান করা হয়েছিল ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন ডলার, কিন্তু মিলেছে চাহিদার মাত্র ৩৫ শতাংশ। ফলে সেপ্টেম্বরেই স্বাস্থ্যসেবা আর ডিসেম্বরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে খাদ্য সহায়তা। এতে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়ন থেকে প্রাণে বাঁচতে সীমান্ত অতিক্রম করে কক্সবাজারে আশ্রয় নেন সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখেরও বেশি। 

প্রায় ৮ বছর ধরে তাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও আশ্রয় ব্যবস্থায় শত শত মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে এ বছর তহবিল ঘাটতি প্রায় ৬৫ শতাংশ, বলছে জাতিসংঘ।

ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (শরণার্থী) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের, জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার তরফ থেকে আমার মনে হয় যেটা দায়িত্ব হওয়া উচিত তা হলো, মিনিমাম একটা সম্মানজনক জীবনধারণের জন্য ১২ লাখ মানুষের পাশে দাঁড়ানো।’

জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানগুলো যে অর্থ পায়, তা গ্লোবাল রেসপন্স প্ল্যান বা জিআরপির অংশ। চলতি বছর ৯০০ মিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা সংশোধন করে ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিয়নে কমিয়ে আনা হয়। এতে মিলেছে মাত্র ৩৫ শতাংশ তহবিল। ফলে বন্ধ হচ্ছে স্কুল, হাসপাতালের কার্যক্রম, প্রটেকশন সার্ভিসও।

আরও পড়ুন:

মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘দাতা সংস্থা বা দেশগুলো সেভাবে ফান্ড রিলিজ করছে না হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাকটিভিটির জন্য। ফলে আপনারা নিশ্চয়-ই এর মধ্যে জেনেছেন যে, স্কুল যেগুলো চলতো বাচ্চাদের জন্য, সেগুলো অনেকগুলোই বন্ধ। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে।’

এমনকি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিরও অক্টোবরের পর আর কোনো কমিটমেন্ট নেই। তহবিল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হলে সেপ্টেম্বর থেকেই ক্যাম্পে চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আর ডিসেম্বরের পর খাদ্য সহায়তা বন্ধ হলে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।

আগামী ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট কক্সবাজারে তিন দিনের এক সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে, যার উদ্দেশ্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি ফেরানো। এরপর জাতিসংঘ নিউইয়র্কে এ নিয়ে একটি বিশেষ সম্মেলন করবে। 

এর আগে, চলতি বছরের ১৪ মার্চ জাতিসংঘ মহাসচিবও ক্যাম্পে এসে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। তহবিল ঘাটতি দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয়শিবিরে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে বলেও আশঙ্কা তাদের।

এসএইচ