মাথার উপর গ্রীষ্মের তপ্ত রোধ, গরমের হাঁসফাঁস, মাঠের ধুলোঝর কোনোকিছু দমাতে পারেনি বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৬ জেলার তরুণদের। মিছিল নিয়ে, প্রকম্পিত স্লোগানে, হাতে দাবিদাওয়া সম্বলিত ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে দুপুর থেকেই খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে জড়ো হতে থাকে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ডাকা তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে।
রাজনীতির নানা পক্ষ থেকে যখন অভিযোগ উঠছে তরুণদের রাজনীতি বিমুখ করার চেষ্টার, অপরাজনীতির ফলে মেধা পাচার হচ্ছে বিদেশে তখন রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে কতটা সোচ্চার তরুণরা?
তরুণদের মধ্যে একজন বলেন, ‘রাজপথে থেকে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে কাজ করছি। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলতে চাই।’
মাঠভর্তি সমাবেশে ছাত্র নেতারা সমবেত তরুণদের অভয় দেন সকল সংকটে পাশে থাকার। রাষ্ট্র কাঠামোতে তরুণদের অধিকার আদায়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম চালানোর আশ্বাস দেন তরুণ ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে যুব নেতারা। তরুণ ও যুব সমাজকে সাথে নিয়ে সকল রাজনৈতিক অপচেষ্টা রুখে দেয়ার হুশিয়ারিও দেন তারা।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের জন্য এ রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমরা আমাদের ছাত্ররাজনীতি অব্যাহত রাখবো।’
যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মনেম বলেন, ‘বেফাঁস মন্তব্য করলে কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ উপযুক্ত জবাব দিবে। জাতীয়তাবাদী যুবদল রাজপথে থেকে কিন্তু এই জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।’
সমাবেশে যোগ দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর সব বিদেশিদের হাতে হস্তান্তর করবেন। কী চুক্তি করে এসেছেন? কী এখতিয়ার আছে আপনার? কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন? আপনার একমাত্র ম্যান্ডেট বাংলাদেশে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ অনুষ্ঠান করা।’
এসময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার ও বিচারের বাহানায় গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার এবং বিচার চলমান প্রক্রিয়া। সেটা চালু থাকবে, যারাই সরকারে আসুক। অনন্তকাল ধরে আপনি বিচার এবং সংস্কারের বাহানা দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কণ্টকাকীর্ণ করবেন না।’
তরুণদের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা ও সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোয় তরুন-যুবকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই এ সমাবেশের মূল লক্ষ্য।
আজকের এই সমাবেশস্থলে যেসব নেতারা কথা বলেছেন প্রায় সবার বক্তব্যেই উঠে আসে আগামী জাতীয় নির্বাচনী সমীকরণে তরুণ ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে। তাই তরুণদের কাছে টানতে বিএনপির এমন আয়োজন যুবকদের কতটা প্রভাবিত করতে পারবে সেটি সামনের দিনগুলোতে আরো স্পষ্ট হবে।