দলগুলোর ভিন্ন চাওয়া পূরণ করে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন দিতে পারবেন ড. ইউনূস?

নির্বাচন ভবন
দেশে এখন
বিশেষ প্রতিবেদন
1

সময়সীমা ঘোষণার পরও নির্বাচন নিয়ে কাটছে না শঙ্কা। বড় রাজনৈতিক দলগুলো স্ব-স্ব অবস্থান থেকে ভিন্ন দাবিতে অনড়। এমতাবস্থায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে কিছু দলের মধ্যে দেখা মিলছে শঙ্কার ছাপ। তবে শঙ্কা কাটিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার কথা রাখবেন বলেও মনে করছেন তারা।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচনের ঘোষণা ও উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত আশ্বাসের পরও শঙ্কা কাটছে না নির্বাচনকে ঘিরে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মৌলিক বিষয়ে একমত হতে না পারার সঙ্গে কিছুটা অস্বস্তির কারণ প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য। সম্প্রতি একটি বিদেশি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবার পুরনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে।

ড. ইউনূসের এমন বক্তব্যের পরও নির্বাচন যথাসময়েই হবে বলে বিশ্বাস করে বিএনপি। তবে জামায়াত ও এনসিপির সংস্কার ও বিচার ছাড়া জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার হুঁশিয়ারি ভাবাচ্ছে বিএনপিকে। এনসিপি যুগ্ম সদস্য সচিব ফরিদুল হক বলেছেন, জিয়াউর রহমান গণপরিষদের গুরুত্ব বুঝলেও তাদের দলের নেতারা বুঝেন না। ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী গণপরিষদ-ই একমাত্র সমাধান বলে মনে করেন তিনি।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ফরিদুল হক বলেন, ‘উনি বলেছিলেন, পরবর্তী নির্বাচন হবে একইসঙ্গে গণপরিষদ এবং পার্লামেন্ট। অবশ্যই আমাদের গণপরিষদে যেতে হবে এবং এটা গণভোটে রেফারেন্ডাম নিয়ে, মানুষের মতামত নিয়ে এটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে আদালত তো নয়-ই, ভবিষ্যতে কোনো পার্লামেন্টও এটা বাতিল করার ক্ষমতা রাখবে না।’

জামায়াত নেতা নুরুল ইসলাম বুলবুল জুলাই ঘোষণাপত্রকে অপূর্ণাঙ্গ আখ্যা দিয়ে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি অন্তর্বর্তী সরকারকেই দিয়ে যাবার জোর দাবি জানান। বিএনপি একমত না হলে গণভোটের মাধ্যমেই ফয়সালা করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও জুলাই সনদ ইস্যুতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ফের বসতে আগ্রহী জামায়াতে ইসলামী।

আরও পড়ুন:

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘একটা ইলেকশন হবে, যেটা আরেকটি ফ্যাসিবাদকে এনে দেবে, এবং সেই ফ্যাসিবাদ দুই বছর পরে তারা আইনগত ভিত্তি দেবে এ ধরনের কোনো বক্তব্যের সঙ্গে এদেশের মানুষ একমত নয়।’

তবে বিএনপির স্থায়ি কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু হুশিঁয়ারী দিয়ে বলেছেন, বিএনপি এসব না মানলে কারো কিছু করার নেই। জামায়াতের গণভোটের দাবিকে আমলে নিচ্ছে না জানিয়ে জনগণ কী চায় সেটি এনসিপিকে বোঝার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘সবশেষ কথা, জনগণ কী চায়? জনগণ ভোট চায়। এদেশে নির্বাচন দরকার। তারা ভয় পাচ্ছে আওয়ামী লীগকে, আবার তারা নিজেরাই আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসছে। আমি বিশ্বাস করতে চাই, ড. ইউনূস কথার রাখবেন। কথা না রাখলে তিনি আন্তর্জাতিকভাবে ধিক্কিত হবেন।’

গণপরিষদ বা গণভোটের প্রতি বিশেষ কোন আগ্রহ না দেখালেও অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এই বাস্তবতায় সমঝোতার পথ কি হবে তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে সবকটি পক্ষ যা এখনও নির্বাচনের অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা।

এসএইচ