সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে কাদা-জল মাখা ভেন্যু, প্রশ্নের মুখে বাফুফে

জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম
ফুটবল
এখন মাঠে
0

টানা বৃষ্টিতে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ভেন্যু বসুন্ধরা কিংস এরেনার যাচ্ছেতাই অবস্থা। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভুটানের ম্যাচে কর্দমাক্ত আর পানিতে টইটম্বুর মাঠে খেলা নিয়ে বাধে লঙ্কাকাণ্ড। এরপরই বেশ সমালোচনায় পড়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। জাতীয় স্টেডিয়ামের মতো উন্নতমানের মাঠ থাকা সত্ত্বেও বাফুফে কেন এমন মাঠকে নির্বাচন করলো, আর প্রচারণায় কেন এত ঘাটতি সে প্রশ্ন উঠছে বারবার।

সাফের বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে নারীদের একের পর এক সাফল্যে প্রাণবন্ত হয়েছে দেশের ফুটবল অঙ্গন। জুনিয়র নারীদের অদম্য গতিতে শুধু বয়সভিত্তিক নয় সময়ের প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী হয়েছে জাতীয় দলও। সেই নারীদের হাত ধরেই টানা দু’বার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর দুর্গম পথ পেরিয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছে এশিয়া কাপের টিকিট।

এত সাফল্য অর্জনের পরও নারীদের বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট নিয়ে বাফুফের বড্ড উদাসীনতা। ভেন্যু কিংবা প্রচারণা কোনো জায়গাতেই খুব একটা দৃষ্টি নেই কর্তৃপক্ষের। সাফের প্রতিযোগিতা চলমান তবে ফেডারেশনে এ নিয়ে নেই কোনো ব্যানার বা পোস্টার।

এমনকি রাজধানীর একপ্রান্তে আয়োজন হওয়া ম্যাচ ভেন্যুর আশপাশেও নেই প্রচারণার ছাপ। এতে যে ফুটবল ভক্তদের সমর্থন হারিয়েছে তা বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার প্রথম ম্যাচে ৬ হাজারের মধ্যে ৩২টি টিকিট বিক্রিতেই প্রমাণ মিলেছে।

জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচ আয়োজনে এক নিশানায় দুই ফায়দা হতো বাফুফের। একদিকে টিকিট থেকে আয় অন্যদিকে বৃষ্টি মৌসুমেও নির্বিঘ্নে ম্যাচ আয়োজন। তবে এ সবকিছুই যেন স্বদিচ্ছায় হাতছাড়া করেছে বাফুফে।

সাফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলাল বলেন, ‘বসুন্ধরার ওই মাঠ অনেক দূর হয়। যাওয়া আসার জন্য খুব ডিফিকাল্ট একটা জায়গা। টিকিটের টাকা তো সাফ নেয় না, সম্পূর্ণটা ওরাই নেয়।’

যেখানে ছেলেদের ফুটবল নিয়ে ফেডারেশনের মাতামাতির কমতি নেই। ভেন্যু থেকে প্রচারণা সবজায়গায় ছিল কর্তাদের ফুল মার্ক পারফরম্যান্স। তবে নারীদের প্রতিযোগিতা নিয়ে এমন গড়িমসি কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক ডালিয়া আক্তার।

ডালিয়া আক্তার বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ চালাবেন, কিন্তু সেখানে যথাযথ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা কেন নেই? এটা প্রশ্নবিদ্ধ। আমার কাছে মনে হয়, এখানে যারা আছেন তারা ব্যর্থ।’

অক্টোবরে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ হংকংয়ের ম্যাচের জন্য চলমান সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস এরেনায়। 

তবে বৃষ্টির কারণে বসুন্ধরা কিংস এরেনার বেহাল দশায় কয়েক ম্যাচ পরই মূল ভেন্যুর পরিবর্তে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রাক্টিস গ্রাউন্ডে দর্শকশূন্য মাঠে খেলতে হয় নারী ফুটবলারদের। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে— এ মাঠ কি শুধুই হামজা-জামালদের জন্য?

বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, ‘মাঠটাকে অক্টোবরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত করতে আমাদের হেভি মেইনটেন্যান্স করতে হবে। তারা পরামর্শ দেয়, সেখানে যত কম খেলানো যায়। সেখানে যত ম্যাচ খেলানো হবে ততই এ প্রসেসটা দীর্ঘ হবে।’

বাফুফে কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস বলেন, ‘আমাদের বুঝতে একটু সময় লেগেছে যে, ওই সময় ঘাস তুললে আমরা সময়মতো মাঠ তৈরি করতে পারবো না।’

দেশের ফুটবলে এগিয়ে চলার যে গল্প প্রতিনিয়ত রচনা করে চলেছেন নারী ফুটবলাররা, সেখানে তাদের ম্যাচ আয়োজনে বাফুফের দায়িত্বপ্রাপ্তদের এমন দায়সারা আচরণে তাদের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে।

এসএইচ