প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের পানি নামতে শুরু করায় বিভিন্ন এলাকায় স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতির চিহ্ন, তবে কমেনি প্লাবিত ৫ গ্রামের হাজারো মানুষের দুর্ভোগ।
একদিনের বন্যায় ভেসে গেছে ৫টি গ্রামের শতাধিক পুকুরের মাছ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তা-ঘাট। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মুহুরী নদীর বাঁধে ভাঙা স্থানটি মেরামত হলেও নতুন করে অন্যান্য স্থানে ভাঙনের শঙ্কা কাটছে না তাদের।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘প্রতি বছরই বন্যা আসলে আমরা আতঙ্কের মধ্যে থাকি।’
আজ (শনিবার, ২১ জুন) সকাল থেকে মুহুরী নদীর পানি এখন বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বাধেঁর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ভাঙনস্থান মেরামতের জন্য জিও ব্যাগ আনা হয়েছে এবং আজ (শনিবার, ২১ জুন) ভাঙনস্থান মেরামত হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। কাজের তদারকি করছে সেনাবাহিনী কনস্ট্রাকশন টিম।
পাউবোর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, ‘এটার নতুন করে পুনর্বাসনের কাজ হচ্ছে, তবে এটা কোনো সমাধান নয়। আপাতত এটা করা হচ্ছে, ব্যাপক আকারে করতে গেলে তার জন্যভালো করে স্টাডি করতে হবে। এমনভাবে করতে হবে যেন ৫০ থেকে ১০০ বছরের জন্য আমরা এটা স্থায়ী করতে পারি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙন কবলিত স্থান মেরামতে জিও ব্যাগ আনা হয়েছে। শুক্রবার (২০ জুন) থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নতুন করে কোথাও ভাঙন দেখা দেয়নি।
এর আগে গেল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বিজয়পুর, বসন্তপুর, বশিখপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। বাড়ি ঘরে পানি ঢোকায় দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা। এছাড়া ফুলগাজী বাজারে পানি উঠায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন দোকানের মালামাল।
এদিকে বন্যার আশঙ্কায় কুমিল্লায় গোমতী নদীর বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদীর তীরে ৮ কিলোমিটার এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ চিহ্নিত করে মাটি ফেলা হচ্ছে। আগেই উচ্ছেদ করা হয়েছে নদীর পাড়ের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা।
পাউবো কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রোজেক্ট পাশ হয়েছে। সেখানে মোটামুটি ৭৮ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। ওই প্রোজেক্টটা সামনে মাসেই হয়তো টেন্ডার হবে। এটা হয়ে গেলেই কাজটা মোটামুটি একটা নিরাপদ অবস্থায় আসবে।’
গেলো বছরের ভয়াবহ বন্যায় গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় অন্তত ২০টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়।
এসময় ঝুকিপূর্ণ স্থানে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা করে এলাকাবাসী। এ অবস্থায় গোমতীর উজান থেকে বয়ে না আসে দুর্যোগ, সেজন্য আগাম প্রস্তুতির এ চিত্রই এখন কিছুটা ভরসা দিচ্ছে এ জনপদকে।