ভারী বৃষ্টিতে রাঙামাটিতে পাহাড় ধস, বাড়তি পানির চাপে বেড়িবাঁধে ভাঙন

বাড়তি পানির চাপে প্লাবিত বিভিন্ন এলাকা
আবহাওয়ার খবর
পরিবেশ ও জলবায়ু
0

সাগরের গভীর নিম্নচাপ বৃষ্টি ঝরিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তবে দেশের কোথাও কোথাও চলমান বৃষ্টি পানির চাপ বাড়িয়েছে। পানির অতিরিক্ত চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে নোয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকায়। ভারী বৃষ্টিতে রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে বন্যার শঙ্কা। কিছুটা দুর্বল হয়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হলেও এখনো উত্তাল সাগর। বেড়েছে নদ-নদীর পানিও।

জোয়ারের তোড়ে প্লাবিত উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়ার কয়েকটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঘরবাড়িতে পানি ঢোকার পাশাপাশি ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। নষ্ট হয়েছে ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।

এ ছাড়া, হাতিয়ার মেঘনা নদীর ঢেউয়ের তোড়ে মালামাল নিয়ে ডুবে গেছে ‘এমভি ফাহিম’ নামে একটি পণ্যবাহী ট্রলার। গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২৯ মে) থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় নিঝুম দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায়। এতে মানুষের পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়ে বনের হরিণও। উপকূলের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি শহরের সড়কে পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি।

ভোলায় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে নদ-নদীর পানি। এতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। মনপুরা, তজুমদ্দিন ও লালমোহন পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে অন্তত ২০টি গ্রাম। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১ হাজরের বেশি ঘরবাড়ি, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। এ ছাড়াও ভেসে গেছে গেছে শতাধিক গবাদি পশু ও অসংখ্য পুকুরে মাছ। ২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল। পাশাপাশি জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি।

উপকূলীয় জেলা বরগুনাতেও অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টিপাত। পায়রা বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এতে অস্বাভাবিক জোয়ারে সদরের ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা গ্রামে রিং বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে এবং আতঙ্ক বাড়ছে ভাঙন প্রবন তীরবর্তী বাসিন্দারা।

পটুয়াখালীতে অস্বাভাবিক জোয়ারে বাউফল, মির্জাগঞ্জ, রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার বেশ কিছু এলাকায় বেড়ি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে ফসলের ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।

হবিগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে বন্যা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানায় জেলা প্রশাসন।

রাঙামাটিতে মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি জেলার সেনাজোনের সামনে গাছ উপড়ে পড়ায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছেন ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দারা।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার পাশাপাশি ভেসে যায় স্থানীয়ভাবে লবণ উৎপাদনের মাঠ। 

কুমিল্লাতেও ভারী বর্ষণে নগরীর সড়ক ও অলিগলিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এতে জেলায় বন্যার শঙ্কা বাড়ছে।

এসএইচ