শুল্কযুদ্ধ উত্তেজনা কমাতে সুইজারল্যান্ডে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চীনের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

শুল্কযুদ্ধ উত্তেজনা কমাতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্রথমবারের মতো চীনের সঙ্গে বৈঠক করলো যুক্তরাষ্ট্র। বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় দুর্দান্ত অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে দু'পক্ষই সম্পূর্ণ শুল্ক পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করেছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। রোববার (১১ মে) দ্বিতীয় দিনের মতো আলোচনার কথা রয়েছে।

এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুরু হয় শুল্ক তীর ছোড়াছুড়ি। কয়েক দফার পাল্টা-পাল্টি লড়াইয়ে চীনা পণ্য আমদানিতে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বসায় যুক্তরাষ্ট্র। বিপরীতে মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করে চীন।

এর মধ্য দিয়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছায় বিশ্বের দুই শক্তিধর অর্থনীতির শুল্কযুদ্ধ। ঝুঁকিতে পড়ে উভয় দেশের বাণিজ্য আয়। তবে ট্রাম্পকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় মার্কিন মুল্লুকে। চীন ছাড়াও অন্যান্য দেশের সঙ্গে শুল্ক বৈরিতায় জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। যা নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড় দেননি বিশ্লেষকরাও।

অর্থনীতি বিশ্লেষক জন কোয়েলচ বলেন, ‘হোয়াইট হাউসের নীতিনির্ধারকরা শুল্ক যুদ্ধকে একটি খেলা হিসাবে বিবেচনা করেন। তারা বিশ্বাস করেন যে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যতটা ক্ষতি হবে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে চীনের। এটা অদূরদর্শিতা।’

শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম একশ দিনের কার্যকলাপের যেসব বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে ট্রাম্প বিমুখতা দেখা গেছে তার মধ্যে অন্যতম ছিল, শুল্ক ইস্যু। 

এরপরই শুল্ক নিয়ে সুর নরম করতে থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আভাস দেন চীনা পণ্য আমদানিতে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৮০ শতাংশ করার।

এরমধ্যেই শুল্ক যুদ্ধ উত্তেজনার পারদ কমাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে চীনের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শনিবার (১০ মে) বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা। 

আলোচনার মূল বিষয় ছিল দুই দেশের মধ্যে আরোপিত উচ্চ শুল্ক এবং তার ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক বাণিজ্য উদ্বেগ। শুল্কযুদ্ধ শুরুর পর এটিই দু'দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক সংলাপ। সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে চলে দুই ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠক। এরপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি না হয়ে স্থান ত্যাগ করেন আলোচকরা।

এ অবস্থায় ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে জেনেভায় চীনের সাথে আলোচনার প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু'পক্ষই সম্পূর্ণ শুল্ক পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করেছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলকভাবে আলোচনা হয়েছে বলেও দাবি করেন ট্রাম্প।

ওয়াশিংটন ও বেইজিং এখনও বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। পরিসংখ্যান তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে মোট পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ৫৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৩৫০ কোটির মার্কিন পণ্য রপ্তানি হয়েছে চীনে। অন্যদিকে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হয়েছে ৪৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য।

এসএইচ