২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে এভাবেই ভোট চান নরেন্দ্র মোদি। রিপাবলিকান নেতার জন্য হিন্দু পুরোহিতদের যজ্ঞের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে। অথচ ক্ষমতা গ্রহণের সাত মাসের মাথায় দুই নেতার সম্পর্ক এখন তলানিতে। ভারতীয় পণ্যে মার্কিন শুল্কারোপে কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল চোখে পড়ার মতো।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলার। নয়াদিল্লির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ওয়াশিংটন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে ভারতের অবস্থান ১০ম। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার। যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ দুই দফায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকৃত পণ্যের শীর্ষে রয়েছে মুক্তা ও মূল্যবান পাথর। শীর্ষ পাঁচ পণ্যের মধ্যে অবস্থান করছে ইলেকট্রিক যন্ত্রাংশ, ওষুধ, পারমাণবিক চুল্লি ও খনিজ জ্বালানি। ওয়াশিংটনের মোট আমদানির মাত্র তিন শতাংশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল। তাই শুল্কের বোঝা ভারতীয়দেরই টানতে হবে, এ নিয়ে দ্বিধা করছেন না কেউই।
আরও পড়ুন:
এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘ভারতীয় পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই বিষয়টি দেখা গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব লক্ষণীয় হয়ে উঠবে।’
আল জাজিরার তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে ১২২ বিলিয়ন ডলারের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি করেছে রাশিয়া। যার প্রায় অর্ধেকেরই গন্তব্য চীনে। ভারতে গেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিনেছে ৮ শতাংশের বেশি। যদিও চীন ও ইইউর চেয়ে ভারতের ওপর মার্কিন শুল্কহার বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তাই দেশটির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ভারতের ওপর শুল্কারোপের পন্থা অবলম্বন করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘ভারতের ওপর শুল্কারোপের কারণ ভূ-রাজনীতি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করতে চান। আমার মতে রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় অখুশি তিনি। তাই ভারতকে চাপে ফেলার মাধ্যমে রাশিয়াকে চাপে ফেলতে চান তিনি।’
ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে আরোপিত ২৫ শতাংশসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে আগামী ২৭ আগস্ট থেকে। এখন দেখার বিষয় আগামী ২০ দিনের মধ্যে ট্রাম্পের মন গলাতে কতটুকু সফল হন মোদি।