মধ্যপ্রাচ্যকে যেন একাই অস্থিতিশীল করে রেখেছে ইসরাইল। শুধু গাজায় নয়, ইয়েমেন আর সিরিয়াতেও থেমে থেমে হামলা করছে আইডিএফ। বাদ যাচ্ছে না সীমান্তবর্তী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলও। স্বৈরশাসনের পতনের পর সিরিয়া কিছুটা শান্ত হলেও আবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে রকেট ছুড়েছে আইডিএফ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের দারায় আর্টিলারি হামলা করেছে ইসরাইল।
যদিও ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, এর আগে সিরিয়ার ভূখণ্ড থেকে প্রোজেক্টাইল ছোড়া হয়েছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, এই হামলার পেছনে দায়ী সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা। এর পরই সিরিয়ার দামেস্ক, কুইনেত্রা ও দারায় হামলা চালায় ইসরাইল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ জানান, ইসরাইলের জন্য হুমকি যেকোন কিছু নির্মূল করা হবে। বলেন, সিরিয়া থেকে ছোড়া দুটি রকেট গোলান মালভূমিতে পড়েছে।
এদিকে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর অভিমুখে আবারও ছোড়া হয়েছে মিসাইল। এতে করে সাইরেনে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো তেল আবিব আর জেরুজালেম। ইয়েমেনে সশস্ত্র হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারেয়া বলেন, লাখ লাখ মানুষ পালিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। ব্যাহত হয়েছে বেন গুরিয়নের কার্যক্রম। সারেয়া বলেন, তেল আবিব, আশদোদ আর ইলিয়াতে তিনটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেন। সারেয়া জানান, বেন গুরিয়নের কার্যকম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে ইরানের সঙ্গেও পরমাণু চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েনের কারণে আশঙ্কা বাড়ছে ইসরাইল – ইরান সংঘাতের। সংবাদ মাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের দাবি, পরমাণু চুক্তিতে কোন অগ্রগতি না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র আর ইসরাইলের হামলা আতঙ্কে প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান। যদিও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলছেন, পরমাণু চুক্তি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কোন চাপই সহ্য করবে না তেহরান।
মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছি না। যারা বলছে আমরা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছি, তারা মুসলিমদের পরমাণু অস্ত্রের ভয় দেখাচ্ছে, এই অঞ্চলকে ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে। পরমাণু গবেষণা আমাদের অধিকার। তারা শুধু স্বপ্নই দেখতে পারে। মুসলিম দেশগুলো জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ। এই অঞ্চলে ইসরাইলকে গণহত্যার সুযোগ করে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।’
দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখবে তেহরান। ইরানের যদি ১০০ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকে, কিন্তু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ না থাকে, সেই পরমাণু কেন্দ্রের কোন কাজ নেই। এমন অবস্থায়ও যুক্তরাষ্ট্র আবারও সতর্ক করেছে, ইরানের ওপর পরমাণু ইস্যুতে চুক্তির জন্য সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা হবে।