বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন সনাতনী ধর্মের অনুসারীরা। আজ (বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট) রমনায় ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়া এ আয়োজনে শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হিন্দু ধর্মেরসহ বিএনপির জাতীয় নেতারা।
আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, একটি গোষ্ঠী ’৭১ কে ভুলিয়ে দিতে চাইছে, এ বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা গোষ্ঠী একাত্তর ভুলিয়ে দিতে চাইছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এটা রুখে দিতে হবে। ঐক্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। আমাদের প্রতিপক্ষ বলে, আমরা সংস্কার চাই না। অথচ সংস্কারের কথা সবার আগে বিএনপি বলেছে। বাংলাদেশে শুধু নয়, পাক-ভারত উপমহাদেশে সবসময়ই সাম্প্রদায়িকতাকে একটা অস্ত্র বানানোর চেষ্টা করা হয় রাজনৈতিক কারণে। সেখান থেকে উঠে আসতে হবে আমাদের। সব সম্প্রদায়কে এক করে আমার এ দেশ ও মাতৃকাকে ভালোবাসতে হবে আমাদের। তাকে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভর্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানান, নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষের নিত্য নতুন শর্ত জনমনে প্রশ্ন তৈরি করছে। শুধু তাই না, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের মতো একটি পক্ষ বিএনপি ঠেকাও রাজনীতি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচারের পতনের পর দেশে এখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার যাত্রা শুরু হয়েছে। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ সংসদ এবং সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রাপথ কিন্তু ঝুঁকি মুক্ত নয়। অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমরা খেয়াল করে দেখছি, এ নির্বাচন নিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বক্তব্য বা মন্তব্য বা নিত্যনতুন শর্ত বা শর্তের প্রস্তাবনা সামগ্রিকভাবে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন:
তিনি বলেন, ‘অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে জনগণ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিতে পারে এ ভয়ে পলাতক স্বৈরাচার বিএনপির বিজয় ঠেকাওয়ের মতো অপরাজনীতি চালু করেছিল। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে এবার ক্ষমতাসীন সরকার নয় বরং কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর আচরণেও সেই পলাতক স্বৈরাচারের সরকারের মতো বিএনপির বিজয় ঠেকাও প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
এসময় পিআর পদ্ধতি নিয়ে তারেক রহমান জানান, বাংলাদেশ সার্বিক পরিস্থতি বিবেচনায় এখন পিআর উপযুক্ত নয়।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিশ্বের অনেকে দেশেই হয়তো পিআর পদ্ধতি রয়েছে, তবে বাংলাদেশ সার্বিক পরিস্থতি বিবেচনায় এখন পিআর উপযুক্ত নয়। প্রস্তাবিত পিআর পদ্ধতিতে কোন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা হচ্ছে সেটা জনগণ জানানার অবকাশ নেই।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রাখে যারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন মনের অজান্তে তারা গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করছেন। ধর্মীয় পরিচয়কে কেউ যেন ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপরে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
বক্তব্যের শেষদিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সহযোগিতার আহ্বান জানান বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।