ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতে মাঠ কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে চীনের সামরিক প্রযুক্তি। যখনই ভারতের কেনা পশ্চিমা কোনো যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন ভূপাতিত করার খবর আসছে, নেপথ্যে উঠে আসছে চীনের যুদ্ধবিমানের নাম। ভারতের শক্তিশালী যুদ্ধবিমান গুড়িয়েছে চীনের জে টেন সি যুদ্ধবিমান।
পাকিস্তানের বৃহত্তম সমরাস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোর একটি চীন। গেল পাঁচ বছরে পাকিস্তানকে ৮১ শতাংশ সমরাস্ত্র একাই দিয়েছে বেইজিং। এরমধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান, মিসাইল, রাডার, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। গেলো ৪০ বছরে বড় ধরনের কোনো যুদ্ধে না জড়ালেও শি জিনপিং প্রশাসন বরাবরই জোর দিয়েছে নিজেদের সামরিক খাত সমৃদ্ধ করতে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাতের মধ্য দিয়ে চীন অবশেষে সুযোগ পেয়েছে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা পরীক্ষার।
আরো পড়ুন:
এরমধ্য দিয়ে জানা গেলো, পশ্চিমা বিশ্বের সমরাস্ত্রের তুলনায় চীনের অস্ত্র কতটা শক্তিশালী। এতদিন ধরে বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি সামরিক প্রযুক্তি অবশেষে পরীক্ষার জায়গা পেলো চীন। সংবাদ মাধ্যম সিএনএন ও রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, বুধবারের (৭ মে) অপারেশন সিন্দুরে পশ্চিমাদের দেয়া যুদ্ধবিমান, মিসাইল আর ইসরাইলের দেয়া ড্রোন মুহূর্তে শেষ করে দিয়েছে পাকিস্তান।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ চীনের সমরাস্ত্র পরীক্ষার জন্য টেস্টিং গ্রাউন্ড। একসঙ্গে দুই দেশ স্থল, সমুদ্র আর আকাশপথে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ইসলামাবাদকে প্রশিক্ষণ আর প্রযুক্তিগত সামরিক সহায়তা দিচ্ছে বেইজিং। ভারত-পাকিস্তান সংঘাত এখন আর দ্বিপাক্ষিক নেই। এশিয়াতে চীনের সামরিক আধিপত্যের প্রমাণ দিচ্ছে।
এই সংঘাতে ভারতের শক্তিশালী সমরাস্ত্র কুপোকাত হওয়া প্রমাণ করে, ভারতের যেকোনো পদক্ষেপকে ভেস্তে দেয়ার মতো ক্ষমতা চীন রাখে। সেটা সীমান্তে, ভারত মহাসাগরে এমনকি মহাকাশেও। গোয়েন্দা বিশ্লেষণ বলছে, আকাশে যুদ্ধ সারাবিশ্বের জন্য দুর্লভ সুযোগ, বৈমানিক, যুদ্ধবিমান, আকাশ থেকে আকাশে ছোড়া মিসাইলের সক্ষমতা যাচাইয়ে। এই জ্ঞান নিজেদের যুদ্ধে কাজে লাগাতে পারে তারা।
আরো পড়ুন:
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই পক্ষই নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে, এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীন। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বলছে, এখন মহাকাশে চীনের ২৬৭টি স্যাটেলাইট আছে, এরমধ্যে ১১৫টিই গোয়েন্দাগিরির জন্য। ৮১টি সামরিক সিগন্যাল তদারকি করে। এই নেটওয়ার্ক শত্রু দেশ ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কাজ করে। এই সামরিক সংঘাত চীনের জন্য যেন হয়ে এসেছে আশীর্বাদ।