যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় তীব্র হামলা ইসরাইলের

ইসরাইলি হামলার পর ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করছেন একজন ফিলিস্তিনি ব্যক্তি
বিদেশে এখন
0

গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক জবাব দিয়েছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরাইল। গতকাল (শুক্রবার, ৫ জুলাই) দিনভর হামলায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩৮ ফিলিস্তিনি। বিপরীতে হামাসের হামলায় নিহত দুই ইসরাইলি সেনা।

যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরাইলের সম্মতি মেলে গেলো সপ্তাহেই। অপেক্ষা ছিল হামাসের জবাবের। এবার সাময়িক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক জবাব দিয়েছে হামাস। প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে বলে দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ১০ জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিবে হামাস। ফিরিয়ে দেয়া হবে ১৮ জিম্মির মরদেহ। বিপরীতে সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করবে ইসরাইল। পাশাপাশি উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহে তুলে নেয়া হবে বিধিনিষেধ। তবে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে ইসরাইলের প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়টির নিশ্চয়তা এখনো দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফিলিস্তিনের আরেক সংগঠন ইসলামিক জিহাদ যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে সমর্থন করলেও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তার দাবি জানিয়েছে। হামাসের জবাব গ্রহণ করে এখন পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইল।

যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা যতই জোরালো হচ্ছে, গাজায় আগ্রাসন ততটাই তীব্র করছে ইসরাইল। শুক্রবার দিনভর আইডিএফের হামলায় উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক ফিলিস্তিনি। আহত সাড়ে ৪শর বেশি মানুষ। গাজার ৬৫ শতাংশের বেশি এলাকা এখন আইডিএফের দখলে। বিপরীতে এদিনই উপত্যকায় হামাসের হামলায় নিহত হয়েছেন দুই ইসরাইলি সেনা। যুদ্ধ শুরুর পর সেনা নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৮০০ ছাড়িয়েছে।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ফ্রান্স ও মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান। আহ্বান জানানো হয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা গাজায় অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছি। একইসঙ্গে উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত ও জিম্মিদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। শান্তি স্থাপনের জন্য মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকা অবশ্যই প্রশংসনীয়।’

মালয়েশিয়া প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘নির্বিচারে গণহত্যা ও বোমাবর্ষণ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সংঘাত নিরসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। শান্তির বিষয়ে কোনো আপোস নয়। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কোনো বিকল্প নেই।’

এদিকে যেকোনো আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। শুক্রবার ফিলিস্তিনের সমর্থনে সানায় অনুষ্ঠিত হয় র‌্যালি। যেখান থেকে কোনোভাবেই ফিলিস্তিনিদের হাত ছেড়ে দেয়া হবে না বলে জানান ইয়েমেনিরা।

হুতি বিদ্রোহীদের একজন বলেন, ‘সম্মানের সঙ্গে বাঁচুন, না হয় সম্মানের সঙ্গে মৃত্যুর স্বাদ নিন। অস্ত্র কিংবা অর্থ, সবকিছু দিয়েই আমরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকবো।’

অন্য একজন বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করছি, গাজার ভাইদের ছেড়ে যাবো না। লক্ষ্য বাস্তবায়নে শহীদ হতেও কুণ্ঠাবোধ করবো না।’

যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙ্গে লেবাননে ফের হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। শুক্রবার দক্ষিণ লেবাননে হামলায় হিজবুল্লাহর এক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে আইডিএফ। তবে আত্মসমর্পণ করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন হিজবুল্লাহ প্রধান নাইম কাশেম।

এসএস