বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও থামছে না গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন

ইসরাইলের ওপর স্যাঙ্কশনের প্রতীকী ছবি
বিদেশে এখন
0

এবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতোদিন নিশ্চুপ থাকলেও গাজায় নেতানিয়াহুর বর্বরতার প্রতিবাদে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আসছে ইসরাইলের ওপর। তবে আন্তর্জাতিক এসব চাপকে থোরাই কেয়ার করছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা এমনকি জাতিসংঘের চাপও থামাতে পারছে না গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন।

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই মুসলিম বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরাইল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সমালোচনা তীব্র হতে থাকে। যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরাইলের ওপর লাগাতার চাপ দিতে থাকে। 

তবে কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছেন না ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপও উপেক্ষা করছেন তিনি।

গাজায় নেতানিয়াহুর বর্বর আর নারকীয়তা এতোটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, এবার আর চুপ থাকতে পারছে না পশ্চিমা দেশগুলোও। তেল আবিবের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে তারা। গেলো সপ্তাহেই ইসরাইলের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা।

ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৮টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত হেগ গ্রুপও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের। সাউথ আফ্রিকা, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হুন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া ও সেনেগাল এই আট দেশের স্বমন্বয়ে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি সংগঠনটি গঠিত হয়।

যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের রায় রক্ষা ও বহাল রাখাই যাদের মূল লক্ষ্য।

এরই মধ্যে গাজা ইস্যুতে হেগ গ্রুপের উদ্যোগে কলম্বিয়ায় চীন, স্পেন, কাতারসহ ৩০টি দেশের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিধি-নিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় বেশ কয়েকটি দেশ।

এছাড়াও গেলো বুধবার (১৬ জুলাই) ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী নেতা ও জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী বেন গাভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে স্লোভানিয়া। 

এছাড়াও তাদের ওপর জুনে সহিংসতার অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে। এর আগের মাসেই গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হয় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। ইসরাইলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য স্থগিতের ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ সরকার।

পশ্চিমাদের পাশাপাশি তুরস্কও বেশ সোচ্চার ইসরাইলের বিরুদ্ধে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না করা পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। 

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে সমর্থন দিয়ে আসছে কলোম্বিয়া, চিলি, স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং তুরস্ক। এছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও গাজায় আগ্রাসন বন্ধে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে একাধিকবার অনুরোধ জানান।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাধারন মানুষও ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ গড়ে তোলে। দাবি তোলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্সসহ দেশে ফিলিস্তিনপন্থীদের পক্ষে স্লোগান তোলে হাজারো বিক্ষোভকারী।

তবে আন্তর্জাতিক এতোসব নিষেধাজ্ঞা ও বিধি-নিষেধের পরও কোনো কিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর আগ্রাসন। গাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি অত্যাচার চালিয়েই যাচ্ছেন তিনি।

এসএইচ